আবাস যোজনার নামে কাটমানি আদায়! চাপের মুখে টাকা ফেরালেন পঞ্চায়েত প্রধান
প্রতিদিন | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: আবাস যোজনার নামে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ। জনরোষের মুখে সেই টাকা ফিরিয়ে দিতে কার্যত বাধ্য হলেন বহিষ্কৃত তৃণমূল নেত্রী তথা পঞ্চায়েত প্রধান নুরি বেগম। মঙ্গলবার উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের কমলাগাঁও সুজালি পঞ্চায়েত এলাকায় ঘটেছে এই ঘটনা।
আবাস যোজনায় নতুন ঘর পাইয়ে দেওয়ার নামে বহু মানুষের থেকে ‘কাটমানি’ নিচ্ছেন বহিষ্কৃত পঞ্চায়েত প্রধান নুরি বেগম, এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। মঙ্গলবার দুপুরে সেই টাকা ফেরত দেওয়া হয়। এর পর পঞ্চায়েত কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় প্রধানের গাড়ি তাড়া করে ‘চোর’ স্লোগান তোলেন বিক্ষোভকারীরা। ইসলামপুর থানার আইসি হীরক বিশ্বাসের নেতৃত্বে রামগঞ্জ ফাঁড়ির পুলিশের তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। যদিও প্রধানের সাফাই, “আবাস যোজনায় কে কার কাছ থেকে কাটমানি নিয়েছে, তা আমি জানি না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে টাকা ফেরত দেওয়ার সময় আমাকে থাকতে বলা হয়েছিল। তাই আমি ছিলাম।” তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি আবদুল সাত্তারের অভিযোগ, এই কাটমানি তুলেছেন প্রধান নুরি বেগমের স্বামী। টাকা তোলার অভিযোগে তাঁকে আগেই পদ থেকে সরানো হয়েছিল।
এ ব্যাপারে তৃণমূলের ইসলামপুর ব্লক সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, “সুজালির পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ রয়েছে। তাই ব্লক কমিটির মিটিংয়ে এক মাস আগেই প্রধানকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু পদত্যাগ করেনি। তাই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আড়াই বছর পূর্ণ না হওয়ায় আইনি জটিলতায় প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা সম্ভব হচ্ছে না।” টাকা ফেরত পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দা দেবল সরকার বলেন, “অনেকদিন আগেই ঘরের জন্য জমি বন্ধক দিয়ে সাড়ে দশ হাজার টাকা দিয়েছিলাম আগের অঞ্চল সভাপতিকে। আজ টাকা ফেরত পেয়ে ভালো লাগছে। তবে নতুন ঘর পেলে আরও ভালো লাগত।” এ ব্যাপারে ইসলামপুরের বিডিও দীপান্বিতা বর্মন বলেন, “উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তরফে যেমন নির্দেশ আসবে, সেইভাবে কাজ হবে।” প্রধানের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রসঙ্গে ইসলামপুর মহকুমা শাসক আবদুল শাহিদ বলেন, “থানায় এফআইআর করে ঘটনার তদন্ত করা হবে।”