• অপহরণের গল্প ফেঁদে পুলিশের জালে তরুণী
    আনন্দবাজার | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • বাড়ির লোকজনের চোখে ধুলো দিয়ে বন্ধুর সঙ্গে সময় কাটানোর উদ্দেশ্যে অপহরণের গল্প তৈরির অভিযোগ উঠল এক তরুণীর বিরুদ্ধে। নিখোঁজ হওয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যে কলকাতা থেকে তাঁর বন্ধু-সহ ওই তরুণীকে উদ্ধার করেছে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ। মঙ্গলবার আসানসোল আদালতে তোলার পরে তরুণীকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাঁর গোপন জবানবন্দি নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে পুলিশ।

    পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আসানসোল পুরসভার ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এক ব্যক্তি সোমবার সন্ধ্যায় আসানসোল দক্ষিণ থানায় অভিযোগ করেন, তাঁর ২১ বছর বয়সী মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। তিনি জানান, সে দিন বিকেল ৫টা ৪০ মিনিট নাগাদ তাঁর মেয়ের মোবাইল নম্বর থেকে তাঁর কাছে একটি ফোন আসে। উল্টো দিক থেকে একটি পুরুষ কণ্ঠে জানানো হয়, তাঁর মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। মুক্তিপণ হিসাবে পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে হবে। এর পরেই তাঁর মেয়ে কাঁদো-কাঁদো গলায় তাঁকে জানান, তাঁকে অপহরণ করে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা তিনি বুঝতে পারছেন না। ছাড়া পেতে হলে পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে হবে।

    মঙ্গলবার সকালে তরুণীর বাবা জানান, তাঁর মেয়ে রানিগঞ্জের একটি চক্ষু হাসপাতালে সেবিকার কাজ করেন। গত ছ’মাস ধরে তিনি আসানসোল রামবন্ধুতলার বাসস্ট্যান্ড থেকে সকাল ১১টার বাসে রানিগঞ্জে যাওয়া-আসা করছেন। সোমবারও একই সময়ে বাড়ি থেকে বেরোন। সারা দিন মেয়ের সঙ্গে আর কোনও কথা হয়নি। বিকেলে ওই ফোন পান তিনি।

    পুলিশ জানায়, তদন্তে নেমে তরুণীর ফোন নম্বরের বিশদ কল রিপোর্ট (সিডিআর) জোগাড় করা হয়। দেখা যায়, একটি বিশেষ নম্বরের সঙ্গে ওই তরুণীর ঘন ঘন ফোনে কথা হয়েছে। পুলিশ ওই নম্বরটির টাওয়ারের অবস্থান ধরে সেটির গতিবিধি নজরে রাখা শুরু করে। দেখা যায়, ওই ফোন নম্বরটি কলকাতার একটি বিশেষ জায়গায় রয়েছে। সোমবার রাতেই পুলিশ সেখানে রওনা দেয়। সেখানেই ওই যুবক এবং তরুণীর সন্ধান পায়।

    পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছে তরুণী স্বীকার করেছেন, তিনি তাঁর ওই বন্ধুর সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য পরিবারের সদস্যদের চোখে ধুলো দিতে নিজেই এই অপহরণের গল্প ফেঁদেছিলেন। মঙ্গলবার সকালে তরুণী ও তাঁর বন্ধুকে আসানসোলে আনা হয়। যেহেতু তাঁর বন্ধুর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি, তাই পুলিশ তাঁকে হেফাজতে নেয়নি। কাল, বৃহস্পতিবার তরুণীর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)