ফিরিয়ে দিলেন দুই নেতাকে, বীরভূম রাজনীতিতে সামনে কি নতুন পথ? অনুব্রতর কামব্যাক মনে করালো অমিতাভ'র 'অগ্নিপথ'
আজকাল | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
আজকাল ওয়েবডেস্ক: পরিচিত জায়গা। নেতাও পরিচিত। হাবভাব, কথা বলার ধরন সবটাই। কী ভাবতে পারেন বা পারেন না সেটাও অনেকটাই দীর্ঘদিন ধরে মিশতে মিশতে সতীর্থরা ধরতে পারেন। কিন্তু মঙ্গলের সকালে দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মণ্ডলের অন্য রূপ দেখল তাঁর দুই সতীর্থ। মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা এবং বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীকে একেবারে দরজা থেকেই ফিরিয়ে দিলেন কেষ্ট বা অনুব্রত। আবার ঘটনাক্রমে এদিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি অনুব্রতর বাড়ির মাত্র দু'কিলোমিটার দূরে গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে প্রশাসনিক বৈঠক করেছেন। যেখানে তিনি একবারও অনুব্রতর নাম নেননি বলেই খবর।
যদিও রাজনৈতিক মহলের ধারণা, মুখ্যমন্ত্রী যদি অনুব্রতর সম্পর্কে প্রশংসা করেন বা দেখা করেন তবে তদন্তকারী কেন্দ্রীয় এজেন্সির সুবিধা হয়ে যাবে অনুব্রতর বিরুদ্ধে আদালতে 'প্রভাবশালী' শব্দটা ব্যবহার করতে। যার জেরে মুস্কিলে পড়তে পারেন অনুব্রত। ফলে সেটা আন্দাজ করেই হয়ত দলনেত্রী এড়িয়ে গিয়েছেন অনুব্রত প্রসঙ্গ।
দ্বিতীয় যে বিষয়টি এই মুহূর্তে বীরভূমের রাজনীতিতে ঘুরপাক খাচ্ছে সেটা হল নিজের 'টিম'-এ অনুব্রত এবার কিছু ঝাড়াই বাছাই করতে পারেন কিনা। বীরভূম তৃণমূলের একটি সূত্র জানিয়েছে, সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর জেলার কয়েকজন নেতার ভূমিকা অনুব্রতর পছন্দ হয়নি। তারই বহিঃপ্রকাশ মঙ্গলবার হয়ে থাকতে পারে বলে ওই সূত্রটি জানিয়েছে।
একটা সময় পর্যন্ত বীরভূম রাজনীতিতে অনুব্রতর সঙ্গে দলেরই আরেক নেতা কাজল শেখ-এর সম্পর্ক একেবারেই ভাল ছিল না। কিন্তু পরিস্থিতির বদল হয়েছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর কাজল বলেছেন, তাঁর নেতা অনুব্রত। এমনকী অনুব্রতর জামিনের খবর প্রকাশ হওয়ার পর কাজল অনুব্রতর উচ্চকন্ঠে প্রশংসা করেছেন। ফলে ভবিষ্যতে এই দু'জন আরও কাছাকাছি আসেন কিনা সেটাও কিন্তু বীরভূম রাজনীতির অন্যতম বড় কৌতূহল। যেখানে দূরে সরে যেতে পারেন অনেকেই।
তবে চেনা মাটি, চেনা পথ। সময়ই বলবে নতুন কেউ সঙ্গী হবেন না পুরনোদের ওপরেই আস্থা রাখবেন। সেটা যাই হোক না কেন, মঙ্গলবার অনুব্রত বুঝিয়ে দিলেন তিনি না থেকেও জেলায় 'ছিলেন' এবং আছেন বা থাকবেন। 'অগ্নিপথ' সিনেমায় 'বিজয়'-এর ভূমিকায় অমিতাভ বচ্চন হাসপাতাল থেকে ফিরে আসার পর যেভাবে তাঁর সমর্থকেরা উল্লাসে ফেটে পড়েছিলেন মঙ্গলবার ঠিক সেভাবেই অনুব্রতকে দেখে আবেগে ফেটে পড়লেন তৃণমূল কর্মীরা। যা বুঝিয়ে দিল, লালমাটির এই জেলায় তৃণমূলের শেষ কথা 'কেষ্ট'দা।