এই সময়: রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলির সুরক্ষা পরিকাঠামো নিয়ে আগামিকাল, বৃহস্পতিবার বিকেলে বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সভাঘরে এই বৈঠকে সশরীরে থাকবেন কলকাতার পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ, স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন, বেলেঘাটা আইডি, ইনস্টিটিউট অফ সাইকোলজির মতো পাঁচটি সংস্থার অধিকর্তাদের পাশাপাশি রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা।রাজ্যের বাকি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষদের ভার্চুয়ালি বৈঠকে অংশ নিতে বলা হয়েছে। গত ১২ সেপ্টেম্বর এই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই সময়ে আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি চলছিল। সেই কর্মবিরতি মেটানোর জন্য ওই দিন বৈঠকের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় শেষ পর্যন্ত স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে মিটিংটি স্থগিত করে দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, আরজি করের ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পরই রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ ও স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটগুলির সুরক্ষা পরিকাঠামো নিয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব চাওয়া হয়। মূলত ছ’টি বিষয়ের উপর এই প্রস্তাব দিতে বলা হয়। এগুলি হলো— সিসিটিভি বসানো, ডাক্তারদের বিশ্রামকক্ষ, শৌচালয়, হাসপাতাল ও হস্টেল চত্বরে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, যথেষ্ট সংখ্যায় নিরাপত্তারক্ষী এবং পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা।
স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও মেডিক্যাল ইন্সটিটিউটগুলি অতিরিক্ত প্রায় সাত হাজার হাই-রেজ়োলিউশন সিসিটিভি বসানোর প্রস্তাব দিয়েছে। এছাড়াও প্রায় আড়াই হাজার অতিরিক্ত নিরাপত্তারক্ষী, ৯২৮টি বিশ্রামকক্ষ, ৮৮৮টি শৌচালয় তৈরির প্রস্তাব রয়েছে।
মেডিক্যাল কলেজগুলিতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে ১০৫টি হাই-মাস্ট লাইট পোস্ট এবং বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহের জন্য ১৬৬৩টি অ্যাকোয়াগার্ড বসানোর প্রস্তাব দিয়েছে। নবান্ন সূত্রের খবর, এই প্রস্তাবগুলি নিয়েই আগামিকালের বৈঠকে আলোচনা হতে পারে। এই সব প্রকল্পের জন্য কত বরাদ্দ প্রয়োজন, কতদিনের মধ্যে কাজ শেষ করা যায়, তা নিয়ে দিশা মিলতে পারে এই বৈঠকে।
ইতিমধ্যে আরজি কর-সহ অন্য সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য সরকার কী পরিকল্পনা গ্রহণ করছে, তার বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছে। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর আরজি কর সংক্রান্ত মামলাটি আবার উঠবে শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে। সেখানেও রাজ্য তার কাজের অগ্রগতির বিষয়ে রিপোর্ট দেবে।
ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ও নিরাপত্তা ঢেলে সাজতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাস্থ্য দপ্তরকে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার কথা ঘোষণা করেছেন। প্রথম দফায় অর্থ দপ্তর ৪০ কোটি টাকা স্বাস্থ্য দপ্তরকে অনুমোদন করেছে। পনেরো দিনের মধ্যে এই কাজ শেষ করার কথা। ইতিমধ্যেই পূর্ত দপ্তর আরজি কর-সহ বেশ কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজে সিসিটিভি বসানোর কাজও শুরু করেছে।