শহরে তৈরি হয় ৮টি ট্রাম ডিপো। এগুলো হল হাওড়ার ঘাস বাগান, বেলগাছিয়া, রাজাবাজার, পার্ক সার্কাস, গড়িয়াহাট, টালিগঞ্জ, কালীঘাট, খিদিরপুর। এগুলোতে রাতে ট্রাম থাকত এবং প্রতিদিনের যাত্রা শেষে প্রয়োজনীয় রক্ষনাবেক্ষণ এবং মেরামত হত। পাশাপাশি শহরে তৈরি হয়েছিল ট্রাম তৈরির ওয়ার্ক শপ। নোনাপুকুর ওয়ার্ক শপে ১৯৭৫ সালে CMDA এর টাকায় ২৫ টি ট্রাম তৈরি হয়। কাঠের তৈরি ট্রাম গুলির নাম ছিল সুন্দরী ট্রাম। সেটিই সম্পূর্ণ রূপে কলকাতায় জন্ম নেওয়া প্রথম ট্রাম। এরপর ১৯৮০ সালে বিশ্ব ব্যাংকের টাকায় জেসপ এবং বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কোম্পানি বিশেষ বরাত পেয়ে ৫১ টি ইস্পাতের ট্রাম তৈরি করে। এখনও কলকাতায় যে ট্রাম চলে সেগুলোই ওই ট্রাম।
১৯৪২ সালে ধর্মতলা থেকে বেহালা ট্রাম লাইন সম্প্রসারণ হয়। ১৯৮৭ সালে তা আরোও বৃদ্ধি পেয়ে জোকা পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হয়। এরপর শহরের কোথাও কোনোদিন আর ট্রাম লাইনের সম্প্রসারণ হয়নি। ট্রাম ডিপোর পাশাপাশি শহরে ১৯৪২ সাল থেকে একাধিক ট্রাম টার্মিনাস তৈরি হয়। এগুলি হল শ্যামবাজার , বিবাদী বাগ, এসপ্ল্যানেড, গ্যালিফ স্ট্রিট, বিধাননগর, জোকা , বেহালা ট্রাম টার্মিনাল। এখানে ট্রাম আসত। ঘুরে চলে যেত। রাতে থাকত না। টার্মিনালে সাইডিং লাইন থাকত। হঠাৎ খারাপ হওয়া ট্রাম সেখানে সরিয়ে রাখা হতো। সেই শহরে থেকে গেল মাত্র ৩ কিলোমিটার ট্রাম লাইন। অথচ বিশ্বের বহু উন্নত এবং আধুনিক শহর যেমন ভিয়েনা, মিলান, বার্লিন, লিসবন, মেলবোর্ন শহরে এখনও ট্রাম চলে। তাহলে এই শহর কি দোষ করল? প্রশ্ন কলকাতা হাইকোর্ট নিয়োজিত ট্রাম পুনরুজ্জীবন কমিটির। ট্রামের যাত্রীরা এখনও অনড়। তাদের দাবি, ট্রাম তোলার একাধিক চেষ্টা এর আগেও হয়েছে। তারা হতে দেননি। আবার সেই চেষ্টা হচ্ছে। এবারও তারা বাধা দেবেন।