চলতি আবহে দুর্গাপুজোয় সরকারি অনুদান কি নেওয়া হবে — সল্টলেকের বিভিন্ন ব্লক-আবাসনের বাসিন্দারা এই সিদ্ধান্তে কার্যত দ্বিধাবিভক্ত। ফলে, তা নিয়ে রীতিমতো ভোটাভুটি শুরু হয়েছে!সেই ভোটাভুটিতে অনুদান না নেওয়ার পক্ষেই রায় দিয়েছেন বি-সি ব্লকের বেশিরভাগ বাসিন্দা। কার্যত বাসিন্দাদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়েই যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেয় প্রতিটি ব্লক কমিটি। তাই এ বার অনুদান নেবেন না বলে ঠিক করেছেন বি-সি ব্লকের পুজো উদ্যোক্তারা। সবমিলিয়ে ২০০ জন বাসিন্দা। এদের মধ্যে ৫৩ জন ভোট দিতে এসেছিলেন। যাঁদের মধ্যে ২৮ জন সরকারি অনুদানের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
সবার আগে অনুদান না-নেওয়ার সিদ্দান্ত নিয়েছিল সি-এ ব্লক। সেই পথে হাঁটছে আরও বেশ কয়েকটি ব্লক। এ-ই ব্লকের ১৩১ জন বাসিন্দার সই করা একটি একটি চিঠি মাসখানেক আগে পেয়েছিলেন ব্লক সমাজ কল্যাণ সংঙ্ঘের পুজো উদ্যোক্তারা। আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে সরকারের অনুদান বর্জন করার দাবি ছিল সেই চিঠিতে। পুজোর ব্যাপ্তি ছোট করতেও আপত্তি নেই বাসিন্দাদের।
তবে ব্লক কমিটি বাসিন্দাদের জানিয়েছে, গত বারের সরকারি অনুদানের টাকায় পুজো প্যান্ডেল চত্বরে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো-সহ নিরাপত্তার অন্য খাতে খরচ করা হয়েছিল। চলতি বছরে সরকারি অনুদান ফেরালে আগামীতে তা আর না পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি ‘সরকার বিরোধী’ তকমা লাগবে ব্লক কমিটির গায়ে। তাই এই অনুদান ফেরানো ঠিক হবে না।
পুজো কমিটির সম্পাদক তাপস সেনগুপ্তর বক্তব্য, ‘আমাদের মতামত শোনার পরে সরকারি অনুদান নেওয়ার পক্ষে বেশিরভাগ মানুষই মত প্রকাশ করেছেন।’ তবে, সরকারি অনুদান নিলেও আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে এ বার পুজোয় ‘অভয়া স্টল’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই পুজোর উদ্যোক্তারা।
সল্টলেকের আই-এ ব্লকের ফোরামের ডাকা বৈঠকে উপস্থিত বাসিন্দাদের অধিকাংশই সরকারি অনুদান না-নেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন। পুজোর জাঁকজমক কমিয়ে দেওয়ার পক্ষে রায় দেন বেশিরভাগ।
সেই মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে পুজো কমিটির তরফে বিধাননগর কমিশনারেটকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ছোট আকারেই পুজো করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে, সরকারি অনুদানের অর্থ এলাকার নিরাপত্তা বাড়ানোর ক্ষেত্রে এবং মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দেওয়ার আবেদন প্রশাসনের কাছে রেখেছেন ওই পুজোর উদ্যোক্তারা।
এই আর্জি প্রসঙ্গে বিধাননগর কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত পুজোর অনুদান অন্য খাতে ব্যবহারের আর্জি সংক্রান্ত চিঠি কোনও পুজো কমিটির কাছ থেকে এসেছে বলে আমার জানা নেই। এলে তা বিবেচনা করে দেখা হবে।’