এই সময়: আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় নাগরিক সমাজের প্রতিবাদ-আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন সিইএসসি-র কিছু কর্মী। সেই কারণে ওই কর্মীদের একাংশকে সিইএসসি অফিসে ঢুকতে তৃণমূল প্রভাবিত ইউনিয়ন বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠল। শুভজিৎ দত্ত নামে সিইএসসি-র এক কর্মী অফিসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে বউবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর পুলিশি হস্তক্ষেপে তিনি অফিসে ঢুকতে পারেন।শুভজিৎ ছাড়াও সিইএসসি-র এক মহিলা কর্মীও তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে ‘থ্রেট কালচার’ চালানোর অভিযোগ তুলেছেন। সিইএসসিতে কর্মরত তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যও অফিসে ঢুকতে বাধা পেয়েছেন বলে অভিযোগ। এই বাধাদানের একটি ভিডিয়ো সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যদিও ‘এই সময়’ এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি।
সিইএসসি-র কর্মীদের একাংশের দাবি, ‘ভিডিয়োতে যিনি অফিসে ঢুকতে বাধা দিচ্ছেন, তিনি তৃণমূল ইউনিয়নের সদস্য দেবাশিস ঘোষ। তৃণমূলের যে পঞ্চায়েত সদস্যকে অফিসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে তিনি হলেন অনুপম মাইতি।’
যদিও তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত এই ইউনিয়নের সর্বোচ্চ নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় সব অভিযোগই উড়িয়ে দিয়েছেন। প্রবীণ এই শ্রমিক নেতার সাফ কথা, ‘আরজি কর নিয়ে কেউ প্রতিবাদ করেছে বলে তাকে অফিসে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না— এই অভিযোগ সঠিক নয়। আমাদের ইউনিয়নকে স্পষ্ট বলা হয়েছে, কাউকে অফিসে ঢুকতে বাধা না দিতে। এক মহিলা কর্মীকে নিয়ে দীর্ঘদিন ঝামেলা চলছে। সেই মহিলা কর্মীর সঙ্গে অনেকেই কাজ করতে চান না। এই কারণে অনেকে পেন-ডাউন করেছেন।’
তৃণমূল প্রভাবিত ইউনিয়নের সদস্যদের একাংশ সিইএসসি-র ভিক্টোরিয়া হাউস, প্রিন্সেপ স্ট্রিট, তারাতলা অফিস-সহ একাধিক অফিসে পেন-ডাউন শুরু করায় পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
তৃণমূল পরিচালিত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ শোভনদেব উড়িয়ে দিলেও শুভজিৎ দত্ত বউবাজার থানায় যে অভিযোগ দায়ের করেছেন সেখানে লেখা হয়েছে, ‘আরজি কর নিয়ে প্রতিবাদী মিছিলে আমি যোগ দিয়েছি— এই কথা বলে আমাকে অফিসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। যে দু’জন আমাকে অফিসে ঢুকতে বাধা দেন, তাঁদের মধ্যে একজন দেবাশিস ঘোষ, আইএনটিটিইউসি-র ওই ইউনিটের সম্পাদক।’
যদিও এই ঘটনা নিয়ে সিইএসসি-র তরফে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনায় কিছু প্রতিবাদীকে অফিসে ঢুকতে বাধা দেওয়ার পাশাপাশি তৃণমূল ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরে বিরুদ্ধ মনোভাবাপন্নদের উপরে গা-জোয়ারি করছে বলেও অভিযোগ। অবশ্য শোভনদেবের বক্তব্য, ‘সিইএসসি-র ইউনিয়ন নির্বাচনে আমরা ৯৭ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছি। কেন আমরা এই সব করব?’
সিটু ইউনিয়নের নেতা শুভাশিস বাগচির পাল্টা যুক্তি, ‘কোনও সংগঠন যদি ৯৭ শতাংশ ভোট পায়, তা হলে বুঝে নিন, কী ভোট হয়েছে। ব্যালট ছিনতাই থেকে হুমকি, রিগিং সব হয়েছে।’ এই বিতর্কের মধ্যেই সিইএসসি-র ছ’জন কর্মীর ট্রান্সফার নিয়ে এ দিন তৃণমূল ইউনিয়ন সংস্থার এক শীর্ষ কর্তাকে ভিক্টোরিয়া হাউসের মধ্যে দীর্ঘ সময় ঘেরাও করে রেখেছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে।