অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে শিয়ালদা আদালতে আরজি কর কাণ্ডে চার্জশিট দাখিল করার কথা সিবিআইয়ের। তবে এখনও খুনের কারণ ঘিরে জারি রয়েছে রহস্য। একাধিক দুর্নীতির বিষয় সামনে এসেছে এরই মধ্যে। মনে করা হচ্ছে, সেই সবের জেরে খুন হলেও হয়ে থাকতে পারেন তরুণী চিকিৎসক। তবে সেই সব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতগ্রাহ্য প্রমাণ সংগ্রহ সম্ভব হয়নি। এমনই দাবি করা হচ্ছে সংবাদপ্রতিদিনের রিপোর্টে। দাবি করা হচ্ছে, আরজি করের ইমারজেন্সি ভবনের ৪ তলার সেমিনার রুম নয়, বরং ৬ বা ৮ তলার কোনও ঘরে ওই নির্যাতিতাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাঁর উপর অত্যাচার করা হয়। পরে সেমিনার রুমে তাঁকে ফেলে আসা হয়েছিল। সেই সময় সঞ্জয় রায় গিয়ে যৌন নির্যাতন চালিয়ে খুন করে থাকতে পারে সেই চিকিৎসককে। তবে এই সবই নাকি এখনও পারিপার্শ্বিক কিছু প্রমাণ এবং কিছু বয়ানের ওপর ভিত্তি করে অনুমান করছে সিবিআই। তবে এখনও যে ব 'তথ্য' সিবিআইয়ের হাতে আছে, তা নাকি বিভ্রান্তিমূলক। এই আবহে অন্য কোনও ঘরে তরুণী চিকিৎসককে নির্যাতন করা হয়ে থাকলেও সেই সংক্রান্ত পোক্ত প্রমাণ সিবিআই এখনও হাতে পায়নি।
আরজি কর কাণ্ডের পর থেকেই এক একটি অধ্যায়ের মতো জনসাধারণের সামনে উঠে এসেছে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে দুর্নীতির পর্বত। তাও বলা হচ্ছে, এ নাকি শুধুমাত্র হিমশৈলের চূড়া। এরই মাঝে আনন্দবাজার পত্রিকারও একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তরুণী চিকিৎসক। এরপরই নাকি তৎকালীন প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষ সরাসরি হুমকি দিয়েছিলেন তাঁকে। আনন্দবাজারের সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, আরজি কর হাসপাতালে ওষুধের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন নির্যাতিতা চিকিৎসক। নির্যাতিতার বিভিন্ন পরিচিতকে উদ্ধৃত করে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, তরুণী চিকিৎসককে দুর্নীতি নিয়ে সরব হতে বারণ করেছিলেন। তবে তাও সরব হয়েছিলেন তিনি। সন্দীপ ঘোষের ঘরে গিয়ে ওষুধের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তার জবাবে নাকি সন্দীপ ঘোষ সরাসরি হুমকি দিয়েছিলেন নির্যাতিতাকে।
সেই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, নির্যাতিতা এবং সন্দীপের কথোপকথনের সময় প্রিন্সিপালের ঘরে উপস্থিত ছিলেন আরজি কর হাসপাতালেরই দু'জন আধিকারিক। তাঁদের মধ্যেই একজন নাকি সেই বিষয়ে মুখ খোলেন সংবাদমাধ্যমের সামনে। সেই ব্যক্তির দাবি, সন্দীপ ঘোষ নাকি নির্যাতিতাকে বলেছিলেন, এত বেশি কথা বললে তাঁর আর পাশ করা হয়ে উঠবে না। আনন্দবাজার পত্রিকার রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়েছে, আরজি করে ওষুধের মান খারাপ এবং কার্যকারিতা নেই বলে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছিল তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের টেবিলে। তবে সন্দীপ সেই নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেননি। পরে যখন নির্যাতিতা চিকিৎসক সরাসরি তাঁর ঘরে এসে অভিযোগ করেছিলেন, তখন তাঁকে পালটা হুমকি দিয়েছিলেন সন্দীপ। অভিযোগ, অ্যান্টিবায়োটিক, লিভারের ওষুধ, স্নায়ুর ওষুধ, প্যারাসিটামলের ক্ষেত্রে জালিয়াতি রয়েছে। তবে তাতে কর্ণপাত করেননি সন্দীপ। তবে এই সব দুর্নীতির কারণেই তরুণী চিকিৎসককে খুন করা হয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয় সিবিআইয়ের কাছে। তাই কোন পথে সিবিআই চার্জশিট দাখিল করবে, এখন সেই দিকেই নজর সবার।