শ্লীলতাহানির মিথ্যা অভিযোগ করে বিপাকে ২০ বছরের তরুণী, মামলা করতে বলল হাইকোর্ট
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
যৌন নিগ্রহের মিথ্যা অভিযোগ করায় এক তরুণীর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলা দায়েরের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালত জানিয়েছে, নিম্ন আদালতে মিথ্যা জবানবন্দি দেওয়ার অভিযোগে অভিযোগকারিনীর বিচার হবে। দোষী প্রমাণিত হলে ৩ বছর কারাদণ্ডের সাজা হতে পারে তাঁর।
ঘটনা মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের। স্থানীয় ৩ যুবকের বিরুদ্ধে মেয়েকে ফুসলিয়ে নিয়ে গিয়ে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেন এক ব্যক্তি। অভিযোগের ভিত্তিতে ৩ জনের বিরুদ্ধে পকসো আইনের ধারায় অভিযোগ দায়ের করে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। ২০২৩ সালের ৮ অগাস্ট যখন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগপত্রে দাবি করা হয়েছিল তখন নাবালিকার বয়স ছিল ১৮ বছরের থেকে কয়েক দিন কম। ওই বছরই ১৭ অগাস্ট অভিযোগকারিনী ম্যজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি দেন। তখন তাঁর বয়স ১৮ বছর পার করেছে। জবানবন্দিতে অভিযুক্তরা তাঁকে যৌন নির্যাতন করেছেন বলে জানিয়েছিলেন অভিযোগকারিনী। যার জেরে আদালত ধৃতদের জামিন খারিজ করে।
এর পর জামিনের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অভিযুক্তরা। বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানির সময় অভিযোগকারিনীর আইনজীবী স্বীকার করে নেন ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে গোপন জবানবন্দিতে মিথ্যা কথা বলেছিলেন যুবতী। এর পরই সরকারি আইনজীবী বলেন, ‘এই স্বীকারোক্তির পরে আদালতের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা উচিত।’ অভিযোগকারিনীর আইনজীবী দাবি করেন, চাপের মুখে মিথ্যা জবানবন্দি দিতে বাধ্য হয়েছিলেন তরুণী।
এর পরই অভিযুক্তদের জামিন মঞ্জুর করে হাইকোর্ট অভিযোগকারিনীর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়েরের নির্দেশ দেয়। আদালত জানিয়েছে, এই মামলার বিচারপ্রক্রিয়া চলবে নিম্ন আদালতে। আদালত উল্লেখ করেছে, একজনের মিথ্যা জবানবন্দির জন্য ৩ জন ব্যক্তি বিনা কারণে ১ বছর জেলবন্দি ছিল। এটা মেনে নেওয়া যায় না।
আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, আদালতে মিথ্যা অভিযোগ করা নতুন ঘটনা নয়। কিন্তু অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে পালটা মামলা করতে আদালতের নির্দেশ নিশ্চই বিরল। আদালত এই প্রবণতাকে কড়া হাতে দমন করার বার্তা দিতে এই নির্দেশ দিয়েছে।