‘কুইন্টাল কুইন্টাল জল ছেড়েছে ডিভিসি’, বন্যা দেখে ক্ষুব্ধ রচনা ফিরলেন ‘বুনো ওল’ কিনে
প্রতিদিন | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সুমন করাতি, হুগলি: অভিনেত্রী এখন সাংসদ। অতঃপর ব্যস্ততা এখন তাঁর দ্বিগুণ। তবে শত কাজের মাঝেও বাজার করার শখে ছেদ পড়েনি ‘দিদি নম্বর ওয়ান’-এর। ভোটপ্রচারের সময়ে হুগলির বিভিন্ন জায়গা থেকে বাজার করতে দেখা গিয়েছিল রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আর পাঁচজনের মতোই সবজি হাতে নিয়ে খুঁটিয়ে দেখে তবেই থলেতে পুড়েছিলেন। আর বুধবার দুপুরে বলাগড়ের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে ফেরার পথে ওল কিনলেন রচনা। তবে তারকা সাংসদের একটাই চিন্তা, “গলা ধরবে না তো?” শুধু তাই নয়, গম্ভীরভাবেই সাংসদের মন্তব্য, “কুইন্টাল কুইন্টাল জল বেরিয়ে আসছে। মানুষের বাড়িঘর কিচ্ছু নেই! সবাই রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছেন। আর ডিভিসি বলছে, জানিয়ে পাঠিয়েছে!”
ভোটপ্রচারের সময়ে রচনা জানিয়েছিলেন, তিনি বাজার করতে ভালোবাসেন। বাড়িতে থাকলে নিজেই বাজার করেন। তবে রান্নার দায়িত্ব পরিচারিকার হাতেই থাকে। যেহেতু রচনা মাছপ্রেমী। তাই মাছও নিজে যাচাই করে কিনতে ভালোবাসেন। বুধবার বলাগড়ের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করে মিলনগড় থেকে জিরাট ফেরার পথে ওল দেখেই দাঁড়িয়ে পড়েন হুগলির তারকা সাংসদ। এক কৃষকের থেকে ওল-ও কিনলেন। রচনাকে দেখে আপ্লুত সেই ব্যক্তি তাঁর হাতে একাধিক ওল তুলে দেওয়ার চেষ্টা করলেও তিনি বলেন- “একটাই যথেষ্ট। এখানে অনেক ওলের চাষ হয়। বাড়িতে নিয়ে যাব। এসব খুব খাই আমি।” তবে সেই ব্যক্তির থেকে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় এও জানতে চাইলেন যে, “গলা ধরবে না তো?”
বন্যা কবলিত হুগলির শ্রীপুর বলাগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁদরা কলোনী, মিলনগর গ্রাম। মাটির বস্তা ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি কিছুই। বুধবার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বলাগড় পরিদর্শনে যান তৃণমূল সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংসদের কাছে নিজেদের সমস্যার কথা জানান গ্রামবাসীরা। ভয়ানক পরিস্থিতি দেখে রচনা বলছেন, “তিন মাস আগে যেখানে দাঁড়িয়ে প্রচার করে গিয়েছি, সেই সমস্ত জায়গা তলিয়ে গিয়েছে। কয়েকটি বাড়ি, এমনকী রাস্তা পর্যন্ত গঙ্গায় মিশে গিয়েছে। খুবই খারাপ অবস্থা। বন্যা কবলিত এলাকার মানুষদের জন্য ত্রাণের আয়োজন করেছি। গঙ্গা ভাঙন রোধ একটা বড় বিষয়। আমি লোকসভায় বলেছি। আবারও বলব। কেন্দ্রের সাহায্য ছাড়া হবে না। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের আদলে বলাগড় মাস্টার প্ল্যান করতে হবে। এর আগে বিজেপি সাংসদ যিনি ছিলেন তিনি কিছুই করেননি এলাকার জন্য। আমি জেতার পর সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করছি।”
বলাগড় এলাকায় গঙ্গার ভাঙনে তলিয়ে গেছে বাড়ি। নদীর পার ভাঙছে প্রতিনিয়ত। ভাঙনের আতঙ্কে দিন কাটে গ্রামবাসীদের। বুধবার সাংসদকে কাছে পেয়ে নিজেদের দুঃখকষ্টের কথা জানান গ্রামের মহিলারা। যাদের বাড়ি তলিয়ে গেছে তাদের আবাসের ঘর মেলেনি বলেও অভিযোগ জানান তারা। রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সাংসদ হিসেবে পাশে আছি। মানুষের ক্ষোভ তো থাকবেই। স্থানীয় মানুষেরা বলছেন, দিদি যে ভাঙন দেখে গেলেন, সেটা একদিনে হয়নি। বিগত চার-পাঁচ বছর ধরে শুরু হয়েছে। তখন থেকেই কেন কাজ করা হয়নি, আমার জানা নেই। তখন থেকে একটু একটু করে কাজ শুরু করলে একটু হলেও বন্যা পরিস্থিতি আজ নিয়ন্ত্রণে আনা যেত।”