স্টাফ রিপোর্টার: এ বছর মা কৈলাস থেকে দোলায় চেপে মর্তে আসছে। তবে ঠাকুরপুকুর এসবি পার্ক সর্বজনীনে দুর্গা আসবেন রথে চেপে। পুজোর কদিন রথেই কাটাবেন মা। বড়দের পুজো অনেক হয়েছে। এবার ঠাকুরপুকুর এসবি পার্ক শৈশবে ফিরে গিয়েছে। শিশুদের কথা মাথায় রেখে এবছর তাদের থিম (Kolkata Durga Puja 2024 Theme) ‘আমাদের দুগ্গা মা’। শিশুদের জীবনশৈলী নিয়ে সেজে উঠছে মণ্ডপ। শুধু শিশু নয়, এই মণ্ডপে এলে বড়রাও ফিরে পাবেন তাঁদের শৈশবকে। থিম সংগীতেও কোনও নামী শিল্পী নেই। কচিকাঁচারাই এবার পুজোর থিম সংগীত গেয়েছে।
বর্তমান যুগে শিশুদের শৈশব বলে কিছু নেই। মাঠে ফুটবল খেলা, রথের মেলায় পাঁপড় খেতে যাওয়া, এগুলি এখন অতীত। শৈশব এখন মুঠোফোনে বন্দি। সেই বন্দিজীবন থেকে পুজোর কদিন শিশুদের মুক্তি দিতে চাইছে এই পুজো কমিটি। শিল্পী পূর্ণেন্দু দে-র ভাবনায় সেজে উঠছে মণ্ডপ। শিল্পী নিজেও সম্প্রতি দাদু হয়েছেন। তাঁর ঘর আলো করে এসেছে নাতি।
শিল্পী বলেন, “এখন বড় থেকে ছোট সকলেই ইদুঁর দৌড়ের প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছে। বাড়ির ছোটদের জন্য ভাবার সময় থাকছে না বড়দের। সারাদিন বড়রা মোবাইলে মুখ গুঁজে রয়েছেন। ফুটবল-ক্রিকেট ছেড়ে মোবাইলে গেম খেলছে ছোটরা। শৈশবকাল বলে আর কিছু নেই। অথচ শৈশবই শিশুদের সব থেকে সুন্দর জগৎ। সেই জগৎকে এবার তুলে ধরা হচ্ছে। এখানে কচিকাঁচারা তাদের শৈশব ফিরে পাবে। এবছর ৫৪ বছরে পা দিয়েছে এসবি পার্ক সর্বজনীন।
গত বছর এই পুজো কমিটির থিম ছিল ‘এলেম নতুন দেশে’। সেখানে পাখি, জল, বায়ুর মতো একটা মুক্ত জগৎকে তুলে ধরা হয়েছিল। সেবার মূল আকর্ষণ ছিল ছ’ফুটের বিশালাকার একটি ধূপকাঠি যা ৭২ ঘণ্টা ধরে জ্বলেছিল। তার সুবাস ছড়িয়েছিল ১ কিলোমিটার পর্যন্ত। এবার মণ্ডপের প্রবেশপথেই থাকছে একটি পালকি। মণ্ডপ জুড়ে ধরা হয়েছে শৈশবকাল।
দুর্গা, অসুর, লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ সকলেই এখানে শিশু। শৈশবের আনন্দে তাদের মেতে থাকতে দেখা যাবে। তাই এখানে দেবী দুর্গার সেই রণংদেহি রূপ থাকছে না। এখানে তাকে অসুর বধ করতে দেখা যাবে না। সিংহ পশুরাজও এখানে হিংস্র নয়। পুজোর কটাদিন রথে বসে থাকা দুর্গার পাশে সে ঘুমিয়ে কাটাবে। ছোট্ট দুর্গার রথে ঝুলতে দেখা যাবে বালক অসুরকে। পুজো উদ্যোক্তা সঞ্জয় মজুমদার জানান, প্রতি বছর নতুন নতুন ভাবনা নিয়ে আসা হয়। সেই ভাবনাগুলি বেশ ভারী ছিল। ছোটদের জন্য কখনও কিছু ভাবা হয়নি। তাই এবার একদম ছোটদের পুজো করছি। মণ্ডপ, প্রতিমা, থিম সংগীত সবই ছোটদের নিয়ে হচ্ছে।