দেবীপক্ষে কি নব রূপে ফিরবে আন্দোলন? জুনিয়র ডাক্তারদের জিবি বৈঠকেই তৈরি 'খসড়া'?
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
আসন্ন দেবীপক্ষের একেবারে সূচনা পর্ব থেকেই আর জি কর খুন ও ধর্ষণ কাণ্ডে নিগৃহীতার জন্য সুবিচার আদায়-সহ অন্যান্য একগুচ্ছ দাবিতে তাঁদের আন্দোলনকে সর্বাত্মক রূপ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার তাঁদের জেনারেল বডি বা জিবি বৈঠকে সেই আন্দোলনের প্রাথমিক রূপরেখা বা খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে বলেও শোনা যাচ্ছে।
এবার কি তবে নতুন কোনও ধারায় আন্দোলনকে বইয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা? সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য বলছে, সেই বিষয়ে এখনই বিস্তারিত কোনও খবর দিতে চাইছেন না তাঁরা।
যদিও সূত্র বলছে, মহালয়ার বেশ কয়েক দিন আগেই আন্দোলনের পরবর্তী রূপরেখা সামনে আনবেন জুনিয়র ডাক্তাররা। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর কলকাতার ধনধান্য স্টেডিয়ামে তাঁরা একটি নাগরিক সম্মেলনের ডাক দিয়েছেন। সেই আয়োজনেই আন্দোলনের পরবর্তী পর্যায় সম্পর্কে একটা স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
জুনিয়র চিকিৎসকদের একগুচ্ছ দাবিদাওয়ার মধ্যে মূল দাবি অবশ্যই হবে নির্যাতিতার জন্য সুবিচার আদায় ও তাঁর দোষীদের কঠোর শাস্তি প্রদান। এত দিন মূলত, রাজ্য সরকারকে নিশানা করে এই দাবি তোলা হলেও এবার তাতে কিছু বদল আসতে পারে।
কারণ, ইতিমধ্যেই সিবিআই-এর হাতে আর জি কর মামলার তদন্তভার চলে গিয়েছে। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে অন্তত তেমন কোনও অগ্রগতি চোখে পড়েনি। উপরন্তু, প্রথম থেকেই কেন্দ্রীয় সরকার এই ঘটনায় নীরব ভূমিকা পালন করেছে বলেও নানা মহলে অভিযোগ উঠেছে।
সেই জায়গা থেকেই এবার কেন্দ্রীয় সরকার ও সিবিআই-এর প্রতিও আন্দোলনের অভিমুখ ঘোরানো হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
জগজ্জননী মা দুর্গা মহিষাসুরের বিনাশ ঘটিয়েছিলেন। তাঁর মর্ত্যে আগমনকালে তাই আন্দোলনের ঝাঁঝ এতটাই তীব্র করতে চাইছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা, যাতে রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা থেকে থ্রেট কালচারেরও চিরতরে বিনাশ ঘটে।
জুনিয়র চিকিৎসকদের এই আন্দোলনের পর থেকেই বেশ কয়েকটি মুখ বাংলার ঘরে-ঘরে পরিচিত হয়ে উঠেছে। তাঁরা প্রথম থেকেই আন্দোলন সম্পর্কে সংবাদমাধ্যমকে তথ্য দিয়েছেন, সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে এসেছেন। ফলে তাঁরাই কার্যত 'আন্দোলনের মুখ' হয়ে উঠেছেন।
এখানেই আপত্তি রয়েছে আন্দোলনকারীদের। তাঁদের বক্তব্য, প্রতিবাদী জুনিয়র ডাক্তারদের কেউই এভাবে 'আন্দোলনের মুখ' হয়ে উঠতে চান না। বস্তুত, তাঁদের বক্তব্য হল - সমাজের সকলস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণেই এই আন্দোলন এক ঐতিহাসিক সর্বজনীন রূপ অর্জন করেছে।
আন্দোলনের এই বিশালতা যাতে ক্ষুণ্ণ না হয়, তাও নিশ্চিত করতে চাইছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সাধারণ মানুষ যেভাবে তাঁদের আন্দোলনে সামিল হয়েছেন, এবার থেকে সেভাবেই আমজনতার বিভিন্ন দাবি পূরণে, তাঁদের বিভিন্ন আন্দোলনেও জুনিয়র চিকিৎসকরা অংশগ্রহণ করতে চাইছেন।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, মঙ্গলবারের জিবি বৈঠকে এসব নিয়েই আলোচনা হয়েছে জুনিয়র চিকিৎসকদের মধ্যে। সেই আলোচনা যথেষ্ট সদর্থক ছিল বলেও জানা গিয়েছে। সকলে মিলে আলোচনা করে ও মত বিনিময়ের মাধ্যমেই তৈরি করা হয়েছে আন্দোলনের পরবর্তী পর্যায়ের খসড়া।