একদিকে বন্যা, অন্যদিকে আকাশের মুখভার, মন ভালো নেই ঢাকিদের
বর্তমান | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, আরামবাগ: পুজো আসতে হাতে গোনা আর কয়েকটা দিন বাকি। ঢাক কাঁধে বেরিয়ে পড়ার সময় এগিয়ে আসছে। অন্যান্যবার মনে বাড়তি আনন্দ থাকে তাঁদের। কিন্তু এ বছর মন ভালো নেই। নিম্নচাপের ফলে সৃষ্টি হওয়া বন্যা এবং মেঘে ঢাকা আকাশ তাঁদের রুজি রুটিতে টান দিতে শুরু করেছে। বন্যার ফলে স্থানীয় পুজো কমিটিগুলি থেকে এখনও ডাক পাচ্ছেন না ঢাকি পরিবারগুলি। পাশাপাশি আকাশ মেঘে ঢাকা থাকায় সূর্যের দেখা না মেলায় ঢাকের চামড়া শোকানো যাচ্ছে না। তাঁরা বলেন, আমরা সারা বছর দিনমজুরি করে সংসার চালাই। পুজোর সময় আমরা বাড়তি ইনকাম করি। সেই টাকায় আমাদের পরিবারের সকলকে নতুন জামা-কাপড় কিনে দিই। তাই পুজো আসায় আমরা খুবই খুশি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত আকাশের অবস্থা ভালো না নয়। তাই আমাদের একটু অসুবিধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। আশা করছি কয়েকদিন দিনের মধ্যে রোদ উঠলে আমরা ঢাকের চামড়া শুকিয়ে টান দিতে পারব। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আরামবাগ মহকুমার পুরশুড়া ও গোঘাটে প্রায় ৩০০টি ঢাকি পরিবার বসবাস করেন। বর্তমানে ঢাকের প্রচলন কমে যাওয়ায় তাদের মধ্যে কিছু ঢাকি এই পেশাকে ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন। পুরশুড়ার ডিহিবাতপুর, আলাটি, গোঘাটের মদিনা, শ্যামবাজার, নবাসন গ্রামে ঢাকি পরিবারগুলির বসবাস। এই পরিবারগুলির মধ্যে অধিকাংশ পরিবারই দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাস করে। মাটির দেওয়াল খড়ের চাল দিয়ে তৈরি বাড়িতেই তাঁদের বসবাস। পুজোর আগে তাঁরা নতুন করে ঢাক বাঁধেন। এই প্রসঙ্গে, গোঘাটের বাবুরামপুর গ্রামের ঢাকি ভৈরব রুইদাস বলেন, আগে ঢাকের প্রচলন ছিল বেশি। বর্তমানে সেই প্রচলন কমে গেছে। তাই পুজোর সময় ছাড়া বাকি দিনগুলিতে আমাদের দিনমজুরি করেই সংসার চালাতে হয়। পুজোর সময় বড় বড় মণ্ডপ বা বনেদিবাড়ির পুজোয় ঢাক বাজিয়ে আমরা বাড়তি কিছু ইনকাম করে বউ-বাচ্চাদের নুতন জামা কাপড় কিনে দিতে পারি। একটু ভালো মন্দ খাওয়া দাওয়া করতে পারি। বাচ্চাদের মুখে হাসি ফোটে। তাই দেখে আমাদেরও খুব আনন্দ হয়। পুজো আসতে আর দেরি নেই। তাই আমরা এখন থেকেই ঢাক বাজানোর প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছি। তবে এ বছর পুজোর মুখে বন্যা, নিম্নচাপের ফলে মেঘে ঢাকা সূর্যের কারণে আমাদের বরাত পেতে এবং ঢাক তৈরি করতে একটু অসুবিধা হচ্ছে। রোদের দেখা পেলে আমরা খুব তাড়াতাড়ি সবকিছু ঠিকঠাক করে নিতে পারব।