• আদিবাসী মহিলাদের রোজগারের দিশা দেখাতে মাছ চাষের প্রশিক্ষণ পুরুলিয়ায়
    বর্তমান | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, মানবাজার: এলাকার আদিবাসী মহিলাদের বিকল্প রোজগারের দিশা দেখাতে মাছ চাষের উদ্যোগ নিল বারাকপুরের কেন্দ্রীয় মৎস্য গবেষণা সংস্থা। পুরুলিয়ার মানবাজার-১ ব্লক এলাকার ৩৫০জন মহিলাকে এই কাজে যুক্ত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তাঁদের কয়েকজনকে বারাকপুরে মাছ চাষের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। বুধবার মানবাজারের গোবিন্দপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মহিলাদের হাতে মাছ ও মাছের খাবার তুলে দেওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রের আইসিএআর- সিআইএফআরআই এর ডিরেক্টর বসন্ত কুমার দাস, সংস্থার বিজ্ঞানী অপর্ণা রায়, মানবাজার-১ ব্লকের বিডিও দেবাশিস ধর, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সবিতা মুদি সহ অন্যান্যরা।


    সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার ৩৫০জন আদিবাসী মহিলাকে এক একটি গ্রুপে ভাগ করে তাদের বিভিন্ন পুকুরে মাছ চাষ করানো হবে। এতে মাছ বিক্রি করে টাকা উপার্জন করতে পারবেন প্রত্যন্ত গ্রামের আদিবাসী মহিলারা। মোট ৩০২বিঘা জলাশয়ে মাছ চাষ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। এদিন ওই পুকুরগুলিতে মাছের চারা ছাড়া হয়। মহিলা মাছ চাষিদের হাতে মাছের খাবারও তুলে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় সংস্থার তরফে।


    বসন্তবাবু বলেন, এখানে যেমন ধান চাষ করে লাভ পাচ্ছেন চাষিরা, তেমনি মহিলারাও যাতে মাছ চাষ করে লাভবান হন সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখানে ৩০২বিঘা জমিতে ৩৫০জন মহিলা মাছ চাষ করবেন। এদিন তাদের মাছের চারা ও খাবার দেওয়া হয়। এতে মহিলারা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হবেন।


    সংস্থার বিজ্ঞানী অপর্ণা রায় বলেন, সাধারণত গ্রামের মানুষ যেভাবে মাছ চাষ করে থাকেন সেটা বিজ্ঞানসম্মত নয়। তাই মাছের উৎপাদন বেশি হয় না। আমরা বিজ্ঞানসম্মতভাবে মাছ চাষ করার জন্য মহিলাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এতে মাছের উৎপাদন বেশি হবে। চাষিরা মাছ বিক্রি করে লাভবান হবেন। 


    বিডিও বলেন, পুরুলিয়া জেলা সহ মানবাজারে মাছের চাহিদা বিপুল রয়েছে, কিন্তু তার তুলনায় উৎপাদন কম। এখানে মাছ চাষ করা নিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থা যে উদ্যোগ নিয়েছে তাতে এখানকার আর্থ সামাজিক ব্যবস্থা অনেক পরিবর্তন হবে।


    গোবিন্দপুর গ্রামের এক মহিলা মাছ চাষি লতিকা মাঝি বলেন, আমরা আগে যেভাবে মাছ চাষ করতাম তা বিজ্ঞানসম্মত নয়। আমাদের কলকাতায় কেন্দ্রীয় সংস্থায় মাছ চাষের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। গোবিন্দপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমিতাভ মিশ্র বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় সংস্থাকে অনুরোধ করেছিলাম এখানকার আদিবাসী মহিলাদের জীবন জীবিকার মান উন্নয়ন করার জন্য মাছ চাষ যাতে করা যায়। সে থেকেই কেন্দ্রীয় সংস্থা মাছ চাষের উদ্যোগ নিয়েছে এখানে। মোট আটটি পুকুরে মাছ চাষ করা হবে। সেজন্য সংস্থার তরফে মাছের চারা ও খাবার দেওয়া হয়েছে। এতে ৩৫০মহিলা উপকৃত হতে পারেন।
  • Link to this news (বর্তমান)