• করিমপুরে ডেঙ্গুর আশঙ্কা বাড়ছে, প্রতিরোধে পদক্ষেপ স্বাস্থ্যদপ্তরের
    বর্তমান | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, করিমপুর: ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতার পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় সাফাই অভিযান সহ সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে করিমপুর স্বাস্থ্যদপ্তর ও ব্লক প্রশাসন। এবছরে করিমপুর ১ ব্লক এলাকায় মোট ১৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হলেও চলতি মাসেই ৭ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত দুই মাসে শুধুমাত্র জ্বর নিয়ে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের বহির্বিভাগে আসা রোগীর সংখ্যা প্রায় তিনশো জন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ১০ জনের রক্তের নমুনায় ডেঙ্গি জীবাণু পাওয়া গিয়েছে। এখনও প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৮-১০ জন রোগী জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এই হাসপাতালে আসছেন। রোগীদের মধ্যে যাঁদের জ্বর তিনদিনের বেশি, তাঁদের রক্ত নেওয়া হচ্ছে এবং ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। রিপোর্টে যাঁদের রক্তে ডেঙ্গুর জীবাণু পাওয়া যাচ্ছে বা যাঁদের প্লেটলেট কমে গিয়েছে, তাঁদের বাড়িতে জানানো হচ্ছে এবং হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। কেউ কেউ বাড়িতেই চিকিৎসা করাচ্ছেন। 


    করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের সুপার মনীষা মণ্ডল বলেন, বেশিদিনের জ্বরের রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। বহির্বিভাগে আসা রোগীদের রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে কারও ডেঙ্গু রিপোর্ট পজিটিভ হলে আশাকর্মী বা এএনএম কর্মী মাধ্যমে সেই রোগীকে জানানো হচ্ছে এবং হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা করা হচ্ছে। ডেঙ্গু সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে প্রত্যেক পঞ্চায়েত এলাকায় স্বাস্থ্যদপ্তর ও ব্লক প্রশাসনের কর্মীরা কাজ করছেন। জমা জলে মশার লার্ভা বেড়ে ওঠে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে সচেতন করা হচ্ছে। চিকিৎসকরা জানান, কখনও ঝিরঝিরে বৃষ্টি, কখনও চাঁদিফাটা রোদ, এমন পরিবেশই ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার বংশ বিস্তারের জন্য আদর্শ। তাতেই অল্প সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা হঠাৎ করে বেড়ে যায়।  শীত পড়লে এডিস ইজিপ্টাই মশা বংশবিস্তার করতে পারে না। তাই সাধারণত নভেম্বর মাসের পর থেকে ডেঙ্গুর প্রভাব কমে যায়। এখনও শীত আসতে দেরি আছে। তাই মানুষের জ্বর আর ডেঙ্গু হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। 


    করিমপুর ১ বিডিও দেবদত্ত চক্রবর্তী বলেন, মানুষকে সচেতন করার কাজ চলছে। বিভিন্ন এলাকায় মশা তাড়াতে জমা জল পরিষ্কার করা ধোয়া হচ্ছে। যাতে জমে থাকা জলে মশা বংশবিস্তার করতে না পারে এবং মানুষ ডেঙ্গু থেকে রেহাই পান। এরমধ্যে হাসপাতালের এক কর্মীর অভিযোগ, মানুষের জ্বরের সুযোগে বাজারে বহু প্যাথলজিক্যাল সেন্টার গজিয়ে উঠেছে। এখন প্রচুর মানুষ জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন আর বাজারে গজিয়ে ওঠা সেইসব সেন্টারের কর্মীরা বাড়ি গিয়ে রোগীর রক্ত সংগ্রহ করছেন। রোগীদের কাছ থেকে কেউ কেউ দেড় থেকে দুই হাজার টাকার বিনিময়েও রক্ত পরীক্ষা করছেন। রোগীরাও বাধ্য হয়ে সেই টাকা খরচ করছেন। অথচ সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে জ্বর কিংবা ডেঙ্গুর চিকিৎসা করা হচ্ছে। তাদের সেই রিপোর্ট কতটা গ্রহণযোগ্য, তাও সরকারের খতিয়ে দেখা উচিত। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)