• নবদ্বীপের গঞ্জডাঙা ঘোষ পাড়ায় বেহাল রাস্তা, অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তায় জল জমে, ক্ষোভ
    বর্তমান | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: স্কুল থেকে ফুলপ্যান্ট ও জুতো দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বেহাল রাস্তায় সেই জুতো আর পায়ে গলাতেই পারছে না পড়ুয়ারা। বৃষ্টি হলেই জল জমে যায় গঞ্জডাঙা বোর্ড প্রাথমিক স্কুলের যাবার রাস্তায়। নিকাশি ব্যবস্থা না থাকায় সেই জল জমে থাকে দীর্ঘদিন। আর এই জমা জল পেরিয়েই প্রতিদিন পড়ুয়া থেকে শিক্ষক- শিক্ষিকাদের স্কুলে আসতে হয়। এমনই ছবি  নবদ্বীপের গঞ্জডাঙা ঘোষ পাড়ায়। একইসঙ্গে এই জল যন্ত্রণায় ভুগতে হয় গ্রামের প্রায় চারশো পরিবারকে। 


     মায়াপুর-বামনপুকুর দু’নম্বর পঞ্চায়েতের গঞ্জডাঙা ঘোষপাড়া গ্রাম। এই গ্রামে প্রায় চারশো পরিবারের বসবাস। গ্রামের শেষ প্রান্তে রয়েছে গঞ্জডাঙা বোর্ড প্রাথমিক স্কুল। ১৯৩৭ সালের প্রতিষ্ঠিত গ্রামের এই স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ১১৫ জন। শিক্ষক-শিক্ষিকা আছেন পাঁচ জন। এই গঞ্জডাঙা ঘোষপাড়া অঞ্চলে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে নিকাশি ব্যবস্থা না থাকায় এবং রাস্তা নিচু হওয়ায় বৃষ্টি হলেই জল জমে যায়। সেই জমা জল পেরিয়ে প্রতিদিন স্কুলে যেতে হয় পড়ুয়া থেকে শিক্ষক শিক্ষিকাদের। এমনকী ওই গ্রামের বাসিন্দাদের। স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা জানালেন, স্কুলের আসা যাওয়ার রাস্তায় জল জমে থাকার কারণে পড়ুয়ারা সরকারের দেওয়া জুতো পায়ে দিয়ে আসে না। এমনকী  জলের জন্য ফুল প্যান্টও পরে আসে না। এই নোংরা জল পেরিয়ে স্কুলে আসতে হয় বলে অনেক পড়ুয়া চর্মরোগের শিকার হচ্ছে। গ্রামবাসীরা জানান, এখানে কোন নিকাশি ব্যবস্থা না থাকায় শীত গ্রীষ্ম যখনই বৃষ্টি হয় তখনই রাস্তায় জল জমে যায়। সেই জল পেরিয়ে গ্রামবাসীদেরকে যাতায়াত করতে হয়। গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকার জুড়ে সব সময় জলকাদা হয়ে থাকার কারণে অনেকর বন্ধু বান্ধব,আত্মীয়-স্বজনও এই গ্রামে আসতে চান না।


    স্থানীয় বাসিন্দা ভারতী ঘোষ বলেন, চারিদিকে নিচু এইখানে বৃষ্টির জল জমে। তারপর বাড়ির জল রাস্তায় নামে। কোনও নিকাশি নালা স্কুল ছাত্র সোমনাথ ঘোষ, সুবোধ ঘোষ, শুভজিৎ ঘোষ. রাহুল ঘোষ, অয়ন্তিকারা কেউ তৃতীয় শ্রেণি কেউ চতুর্থ শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। ওরা জানায়, সারা বছরই এরকম জল থাকে আমাদের এই রাস্তায়। মাঝে মধ্যে সাপও দেখি। 


    গঞ্জডাঙা বোর্ড প্রাথমিক স্কুলের সহ শিক্ষক তরুণ কান্তি ঘোষ বলেন, ধুবুলিয়া থেকে আসি।এই স্কুলে ২০১০ সাল থেকে আসি।আমরা পাঁচজন শিক্ষক- শিক্ষিকা এখানে পড়াই।ছাত্রের সংখ্যা ১১৫ জন। বহু দিনের জল যন্ত্রণার সমস্যা। আর এক শিক্ষক চন্দ্রেন্দু পাল বলেন, আমি ২০২০ সাল থেকে এই স্কুলে আসছি। ছাত্রদের আমরা যে স্কুলের ড্রেস হিসেবে ফুলপ্যান্ট দিই, সেগুলো পরে আসতে পারে না।


     আর এক শিক্ষক ধনঞ্জয় চৌধুরী বলেন, জুন, জুলাই থেকে এখন সেপ্টেম্বর এই জল কাদা থাকে চার থেকে পাঁচ মাস। এমনকী জলের জন্য অনেক বাচ্চাদেরকে তাদের অভিভাবকেরা কোলে করে স্কুলে দিয়ে যান। বিষয়টি এস আই, ডি আই অফিসে মৌখিক ভাবে জানানো হয়েছে বারবার।


    গঞ্জডাঙা বোর্ড প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পরিনীতা ঘোষ বলেন, এই জল কাদার মধ্যে দিয়ে আসতে গিয়ে অনেক পড়ুয়ার পায়ে ঘা হয়ে গিয়েছে। আমি ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে এই স্কুলে প্রধান শিক্ষিকা হয়ে এসেছি। মায়াপুর-বামনপুকুর দু’নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান মৈত্রেয়ী ঘোষ বলেন, প্রায় দু’ কিলোমিটার নিকাশি ব্যবস্থা নেই। পঞ্চায়েতের পক্ষে এ কাজ করা সম্ভব নয়। আমরা পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদকে জানিয়েছি।
  • Link to this news (বর্তমান)