সংবাদদাতা, দিনহাটা: স্কুলের বাইরে দাঁড়িয়ে একদল যুবক। তাদের লাল চুল–কানে দুল। ফিল্মি লুক আর চুলের স্টাইল দেখেই প্রেমে হাবুডুবু নবম-দশম শ্রেণির ছাত্রীরা। ব্যাস আর কি, এরপর মোবাইল নম্বর আদান প্রদান, সখ্যতা গাঢ় হলেই নাবালিকা প্রেমিকাকে নিয়ে চম্পট। এই ধরণের ঘটনা রুখতে ময়দানে নেমেছে পিঙ্ক মোবাইল ভ্যান। দিনহাটার বিভিন্ন স্কুলের সামনে থেকে রোমিওদের বাগে আনতে কড়া টহলদারি করছে মহিলা পুলিসের এই টিম। এই ব্যাপারে দিনহাটা মহকুমা পুলিস আধিকারিক ধীমান মিত্র বলেন, শহরের বিদ্যালয়গুলি সহ একাধিক জায়গায় পিঙ্ক মোবাইল পেট্রোলিং ভ্যান টহল দিচ্ছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
দিনহাটা শহরের বিদ্যালয়গুলির সামনে টিফিন টাইমে ভিড় জমায় রোমিওরা। বিভিন্ন স্টাইলে চুল কাটে তারা। চুলে নানা রঙ। বেশিরভাগই বিভিন্ন দোকানে কাজ করে। নয়া ফ্যাশনের কাপড় পরে প্রতিদিনই হাজির হয় স্কুলের সামনে। এই ‘লোকাল হিরো’দের দেখে প্রেমে মজে যায় অপ্রাপ্তবয়স্করা। একবার মোবাইল নম্বর আদান প্রদান হলেই রোমিওদের কেল্লাফতে। এরপর নানা অছিলায় পার্টি করে সখ্যতা জমিয়ে পরে প্রেমিকাকে নিয়ে ভিনরাজ্যে পাড়ি দেয় সেই রোমিওরা। বাড়ি থেকে মেয়ে পালানোর পর হুঁশ ফেরে বাবা মায়ের। থানায় অভিযোগ করে সম্প্রতি শহরে একটি ঘটনায় পথ অবরোধও হয়। নাবালিকার মেয়ের খোঁজে ভিনরাজ্যে যায় পুলিস। ঘটনার তদন্তে নেমে অভিযুক্তদের একাধিক বন্ধুকে জেরা করা হয়। তাতেই মেলে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিভিন্ন দোকানে কাজ করা যুবকদের সঙ্গে একাধিক স্কুল ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্কের বিষয়ে জানা যায়। যুবকরা টাকা জমিয়ে বান্ধবীকে নিয়ে ভিন রাজ্যে চম্পট দিচ্ছে। তারপরই পুলিসি অভিযানে মুম্বই, বেঙ্গালুরু, দিল্লি থেকে একাধিক নাবালিকা উদ্ধার হয়েছে। গত দু’মাসে ১৫ জনের বেশি নাবালিকা অপহরণের অভিযোগ হয়েছে দিনহাটা মহকুমাজুড়ে। তাদের উদ্ধারও করা হয়েছে।
পুলিস জানিয়েছে, মেয়েদের নিরাপত্তার জন্য পিঙ্ক মোবাইল ভ্যান চলছে। সাদা পোশাকেও নজরদারি চলছে। কোনও খবর মিললেই তৎপরতা শুরু হয়। অভিযোগ দায়ের করে নিখোঁজকে উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। একাধিক সাফল্যও মিলেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে।