কম দামে সাড়া নেই, পুরসভার ই-বর্জ্য সংগ্রহ ক্যাম্প নিয়ে অনীহা শহরবাসীর
বর্তমান | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: অকেজো ফ্রিজের দাম মাত্র ৬৪৪ টাকা। খারাপ হয়ে যাওয়া ওয়াশিং মেশিন ৪৮৪ টাকা, টেলিফোনের রিসিভার ১২ টাকা, ভিডিও ক্যামেরা ৬০টাকা! এই দামেই নাগরিকদের থেকে ই-বর্জ্য সংগ্রহ করছে কলকাতা পুরসভা। রীতিমতো শিবির করে চলছে ই-বর্জ্য সংগ্রহ। শিবিরে আসা মানুষজনের প্রশ্ন, ‘ওই অকেজো ফ্রিজ ১৫০০-২০০০ টাকায় সহজেই বিক্রি করা যায়। তাহলে এখানে এসব দিয়ে তো কোনও লাভ নেই।’ এই কারণেই ই-বর্জ্য সংগ্রহের শিবিরগুলিতে তেমন সাড়া মিলছে না বলে মনে করা হচ্ছে।
সম্প্রতি ই-বর্জ্য সংগ্রহের শিবির চালু করেছে পুরসভা। সহযোগিতায় রয়েছে ওয়েবেল। অকেজো, ভাঙা বা পরিত্যক্ত ১০৬ ধরনের বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম কিনে নেওয়া হচ্ছে এই শিবিরগুলিতে। ইউপিআইয়ের মাধ্যমে অনলাইনে টাকা মিটিয়ে দিচ্ছে পুরসভা। কিন্তু এসব শিবির নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে তেমন আগ্রহ চোখে পড়েনি। ১ নম্বর বরোর শিবিরে একটি অকেজো এলইডি টিভি নিয়ে এসেছিলেন কাশীপুরের বাসিন্দা সহেলি নাগ। তাঁর কথায়, ‘যা দাম শুনলাম, তাতে এখানে আর দিলাম না। আমার পাশের বাড়িতেই ক’দিন আগে হাজার টাকায় খারাপ এলইডি টিভি বিক্রি করেছে। পাড়ায় পাড়ায় যারা ভাঙা জিনিসপত্র কেনার জন্য হাঁক পাড়ে, তাদের কাছেই বিক্রি করব।’ কালীঘাটের একটি সেলুনের মালিক সুখদেব ভৌমিক বললেন, ‘খারাপ হয়ে যাওয়া হেয়ার ড্রায়ার, ট্রিমার, ইলেকট্রিক কেটলির জন্য মাত্র ১৬ টাকা দিচ্ছে। বাইরে অন্তত ১০০ থেকে ১৫০ টাকা দাম পাব। তাহলে পুরসভার ওখানে দিয়ে কী লাভ?’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কোন ই-বর্জ্যের জন্য কত টাকা মিলবে, সেই দাম ওয়েবেল ঠিক করে। পুরসভার এক্ষেত্রে কোনও ভূমিকা নেই। সংগৃহীত যাবতীয় ই-বর্জ্যও তারাই নিচ্ছে। এক শীর্ষ পুরকর্তার কথায়, ‘ই-বর্জ্য কেউ খোলা বাজারে বেচতেই পারেন। এ ব্যাপারে বাজারের সঙ্গে সরকারি উদ্যোগের কোনও প্রতিযোগিতা নেই। আমরা বাইরের বাজার বন্ধ করতেও চাই না। আমরা বলছি, পুরসভার ডাস্টবিনে কেউ অকেজো টিভি, মোবাইল, কম্পিউটার স্ক্রিন ইত্যাদি ফেলবেন না। তার চেয়ে আমাদের কাছে কম টাকায় হলেও বেচে দিন।’ পুরসভা জানাচ্ছে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ১ ও ৯ নম্বর বরো অফিসে শিবির হয়েছে। আজ, বুধবার ২ ও ১০ নম্বর বরোয় শিবির হবে। প্রতিটি জায়গায় সকালে ১০ টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টানা সাতদিন এই শিবির চলছে। পুজোর ছুটির পর ১২ নভেম্বর ফের শুরু হবে এমন শিবির। সেদিন ৩ ও ১১ নম্বর বরোতে ই-বর্জ্য সংগ্রহ করা হবে।-নিজস্ব চিত্র