• ‘আতঙ্কের’ অন্য নাম এল-২৩৮ গতিতে লাগাম টানার দাবি যাত্রীদের
    বর্তমান | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: যতদিন যাচ্ছে ততই গতি বাড়ছে বারাসত থেকে হাওড়াগামী বাসের। এর জেরে প্রায়ই ছোটখাট দুর্ঘটনা ঘটছে। এই রুটে বাসের গতিতে লাগাম টানতে এতদিন উদ্যোগী হয়নি কেউ। এ নিয়ে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করুক প্রশাসন, এমনটাই চাইছেন নিত্যযাত্রীরা।


    নীল-হলুদ রঙের বাস এল-২৩৮ বারাসত থেকে যায় হাওড়া স্টেশনে। এই রুটে চলে ৫০টিরও বেশি বাস। এই বাস নিয়ে ক্রমাগত আতঙ্ক বাড়ছে বারাসতবাসীর। সাঁ-সাঁ বেগে ছুটে গিয়ে বাস থামে নির্দিষ্ট স্টপেজে। কখনও আবার স্টপেজের আগে বা পড়ে কেউ হাত দেখালেও দাঁড়িয়ে পড়ে এই বাস। বারাসত থেকে এই বাস যশোর রোড ধরে মধ্যমগ্রাম, এয়ারপোর্ট, বাগুইহাটি, লেকটাউন, উল্টোডাঙা হয়ে খান্না, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, এম জি রোড হয়ে হাওড়া স্টেশনে যায়। আর বারাসত থেকে বারুইপুর, ধামাখালি, গড়িয়া, সাঁতরাগাছি সহ বেশ কয়েকটি রুটের বাস এল-২৩৮ রুটের মতোই উল্টোডাঙা হয়ে বাইপাসের দিকে যায়। একারণেই রেষারেষি। তা ইদানীং লাগামছাড়া হয়েছে বলে মত নিত্যযাত্রীদের। দিনে রাস্তায় গাড়ির চাপ থাকায় বেশি গতি তুলতে পারে না। কিন্তু রাতের দিকে গাড়ির চাপ কমলে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছোটে এই বাস। আগের বাসকে টেক্কা দিতে না পারলে যেন শান্তি পান না পিছনের বাসের চালক। ওভারটেক করতে গিয়ে কখনও কখনও দু’টি বাসের ঠেকাঠেকিও হয়।


    বারাসতের শেঠপুকুরের বাসিন্দা সজল গুঁই বলেন, আতঙ্কের অপর নাম এল-২৩৮। শহরে ঢোকা বা বেরনোর সময় এর গতি দেখলে ভিতরটা শুকিয়ে যায়। এই বাসকে দেখলে অনেকটা আগেই দাঁড়িয়ে পড়তে হয়। গতিতে লাগাম টানার কোনও তাগিদ নেই চালকদের। অন্যদিকে ডাকবাংলোর বাসিন্দা সারু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বারাসত থেকে হাওড়াগামী এই বাস যেন ঘূর্ণিঝড়। যেভাবে যায়, যে কোনও সময় বিপদ ঘটতে পারে। যাঁরা এই বাসে চড়েন, তাঁদের যা অবস্থা হয় বোঝাই যায়। উল্টোডাঙাগামী যে কোনও বাসকে হেলায় ওভারটেক করে এল-২৩৮। ভাবুন কী গতি! পেশায় শিক্ষিকা নিত্যযাত্রী দেবী বসুর কথায়, লোকাল বাসের থেকে ভাড়া বেশি। তবু, হাউসফুল। বাসে পা রাখার জায়গা পাওয়া যায় না। আর গতি নিয়ে কথা না বলাই ভালো।


    প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার এই রুটের বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় এক বৃদ্ধার। এনিয়ে আইএনটিটিইউসির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস দাশগুপ্ত বলেন, আগে বারাসত থেকে হাওড়া স্টেশন প্রায় ২৮ কিমি রাস্তা যেতে এই বাসের সময় লাগত ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট। এখন আমরা সেই সময় বাড়িয়ে করেছি দেড় ঘণ্টা। তারপরেও যদি বাসের লাগামহীন গতির অভিযোগ ওঠে, তাহলে তা খতিয়ে দেখা হবে। আমরা দ্রুত এই বাস মালিকদের নিয়ে আলোচনায় বসব। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)