কংসাবতীর জল বাড়লে বৈতা পঞ্চায়েতের যাতায়াতের ভরসা নৌকা, সেতুর দাবি
বর্তমান | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্রাম: ঝাড়গ্ৰামের উত্তর দিক দিয়ে বইছে কংসাবতী। গ্রীষ্মকালে নদীতে জল কম থাকে। বর্ষায় নদীর বুক দিয়ে বিপুল জলস্রোত বয়ে যায়। বিনপুর-১ ব্লকের বৈতা গ্ৰাম পঞ্চায়েতের পলাশি, আঁধারজোড়া, ভুলকা গ্ৰামের বাসিন্দাদের পারাপারের জন্য ভরসা তখন একটি মাত্র নৌকা। সন্ধ্যার পর ফেরিঘাটে নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তখন সমস্যায় পড়তে হয়। তাই নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি নদীর উপর সেতু তৈরি করার।
কংসাবতী নদী স্থানীয় মানুষের কাছে কাঁসাই নামে পরিচিত। বাঁকুড়ার মুকুটমণি জলাধার থেকে জল ছাড়লে কংসাবতী ফুলেফেঁপে ওঠে। পলাশি ও বৈতা গ্ৰামের মাঝে বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দু’পাশের গ্ৰামের বাসিন্দাদের বর্ষায় নৌকা করে পারাপার করতে হয়। ভরা নদী পেরিয়ে ঝাড়গ্ৰাম শহরের স্কুল, কলেজ, অফিস আদালত ও বাজার করতে আসতে হয়। অন্যদিকে ধেরুয়া হয়ে আসতে গেলে ৩০কিমি পথ অতিক্রম করতে হয়। সন্ধ্যার পর ফেরিঘাটে নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কোনও প্রয়োজনে রাতে শহরে আসতে গেলে ঘুরপথ ছাড়া অন্য উপায় নেই। পলাশি ও বৈতার মাঝে কংসাবতী নদীর উপর দীর্ঘদিন ধরে সেতু তৈরির দাবি উঠছে। প্রশাসনের সর্বস্তরে লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে। তারপরেও কাজ না হওয়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। পলাশি গ্ৰামের বাসিন্দা সীতারাম আচার্য বলেন, বৈতা ও ধরমপুর গ্ৰাম পঞ্চায়েতের ২০টির বেশি গ্ৰামের বাসিন্দারা এই নদীর উপর দিয়ে পারাপার করেন। স্কুল, কলেজ অফিস থেকে শুরু করে সবকিছুর জন্য আমাদের ঝাড়গ্ৰাম শহরে আসতে হয়। সব্জি বিক্রেতা স্বপন রাউত বলেন, গ্রীষ্ম হোক বর্ষা-নদী পার করতে গিয়ে সবসময় আমাদের সমস্যায় পড়তে হয়। গ্রীষ্মকালে নদীর বালির চর পেরিয়ে মাল নিয়ে আসতে হয়। বর্ষাকালে আবার ঝুঁকি নিয়ে ভরা নদী পেরতে হয়। গ্ৰামের বাসিন্দা বিজয় রাউত বলেন, রাতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে আমাদের সবচেয়ে বেশি দুঃশ্চিন্তা হয়। হাসপাতালে ঠিক সময়ে পৌঁছতে না পেরে মৃত্যুর ঘটানাও ঘটছে। পলাশি গ্ৰামের বাসিন্দা বৈতা শ্রীগোপাল হাইস্কুলের পড়ুয়াদের বক্তব্য, এখন পরীক্ষা চলছে। স্কুলে নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছনোর জন্য বাড়ি থেকে বের হতে হয়। একটা নৌকা পারাপার করতে অনেক সময় লাগে। বৃষ্টি হলে অনেক সময় নৌকা চলাচল বন্ধ যায়। যার জেরে স্কুলে যাওয়া হয় না। বৈতা গ্ৰাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তারকা চালক বলেন, বর্ষার সময় নদী ফুঁসে ওঠে। ঝুঁকি নিয়েই নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা পারাপার করেন। সেতু তৈরির দাবি দীর্ঘদিনের। প্রশাসন যাতে বিষয়টা দেখে পঞ্চায়েতের তরফেও বলা হয়েছে। সাংসদ কালীপদ সরেন বলেন, বৈতা গ্ৰামের বাসিন্দাদের নদী পারাপারের সমস্যার বিষয়ে অবগত আছি। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।- বিনপুর-১ ব্লকের বৈতাতে তোলা নিজস্ব চিত্র