• অনুব্রত ফেরার উল্লাস, মল্লারপুরে অকাল হোলি, বাজল ১০১টি ঢাক, নকুলদানা বিলি
    বর্তমান | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • বলরাম দত্তবণিক, রামপুরহাট: আগে ‘ঢ্যাঁড়া’ পিটিয়ে গ্রামের বাসিন্দাদের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করা হতো। তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের জেলায় ফেরার পরই গ্রামে কার্যত সেই কায়দায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন শাসকদলের কর্মী-সমর্থকরা। ১০১টি ঢাক নিয়ে মিছিল করা হল। বোল উঠল ‘চড়াম চড়াম’। সঙ্গে নেতার প্রিয় নুকুলদানাও বিলি করা হল। ওড়ানো হল সবুজ আবির। কেষ্ট ফেরায় বুধবার মল্লারপুরের বীরচন্দ্রপুর গ্রামে এভাবেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। 


    একসময় ভোট এলেই অনুব্রত নিত্যনতুন দাওয়াই দিতেন। কখনও চড়াম চড়াম ঢাক বাজানো, কখনও আবার ভোটের লাইনে গুড়-বাতাসা, নুকুলদানা বিলি করার কথা বলতেন। জেলায় বিরোধীদের কার্যত কোণঠাসা করে রেখেছিলেন তিনি। যা নিয়ে বিতর্কও কম হতো না। কিন্তু এসবের তোয়াক্কা করতেন না তিনি। কিন্তু অনুব্রত তিহারের জেলে থাকাকালীন সেসব শোনা যায়নি। এর মাঝে পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচন পেরিয়ে গিয়েছে। প্রায় দু’বছর পর তিহার জেল থেকে মুক্তি পেয়ে মঙ্গলবার বীরভূমে ফিরেছেন জেলা সভাপতি। অনুগামী ও দলের নেতা-কর্মীরা পুষ্পবৃষ্টি করে শঙ্খ বাজিয়ে স্বাগত জানিয়েছেন। 


    বুধবারও একই ছবি ধরা পড়েছে নিত্যানন্দ মহাপ্রভুর জন্মস্থান বীরচন্দ্রপুরে। এদিন বীরচন্দ্রপুরে ডাবুক অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে নিতাই বাড়ির গেট থেকে বিশাল মিছিল বের করা হয়। মিছিলে ১০১টি ঢাক ছিল। সঙ্গে চলে সবুজ আবির খেলা। কর্মীরা কেষ্টদার নামে স্লোগান দেন। গোটা গ্রাম ঘুরে ফের নিতাই বাড়িতে এসে মিছিল শেষ হয়। এলাকার বাসিন্দা তথা তৃণমূলের জেলা কমিটির সদস্য তিমির গোস্বামী বলেন, বাংলা বিরোধী শক্তির ষড়যন্ত্র, ধাপ্পাবাজি, মিথ্যাচারকে ধ্বংস করে দাদা আমাদের মাঝে ফিরছেন। আমরা খুশি। চড়াম চড়াম ঢাক বা‌঩জিয়ে তাঁর আগমনের বার্তা দেওয়া হল মানুষকে।  সেইসঙ্গে দাদার প্রিয় নুকুলদানা বিলি করা হল।  


    যদিও এলাকার বিজেপি নেতা গৌতম মাল বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকের উচ্ছ্বাস দেখলাম। এবার অন্য কায়দায় খেলা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছে। আবার ভয়ের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে চাইছে তারা। বিষয়টি নেতৃত্বকে জানাব। যদিও তিমিরবাবু বলেন, এলাকায় কোনওদিনই ভয়ের পরিবেশ ছিল না। এখনও নেই। বিজেপি চক্রান্ত করে আমাদের অভিভাবককে জেলে ভরে রেখেছিল। তিনি ছাড়া পেয়ে জেলায় আসায় আমরা খুশি। তিনি যেহেতু ঢাকের বাজনা, নুকলদানা পছন্দ করেন তাই আমরা ঢাক বাজিয়ে আবির খেলে নুকুলদানা বিলি করেছি। 


    রামপুরহাট শহরে অনুব্রতর ছবি সহ ফ্লেক্সে ছয়লাপ করে দেওয়া হয়েছে। তাতে লেখা হয়েছে, ‘বীরভূমের মাটিতে সুস্বাগতম।’ যদিও ফ্লেক্সে অন্য কোনও নেতার ছবি স্থান পায়নি। জেলা সহ সভাপতি সৌমেন ভকত বলেন, কেষ্টদা আমাদের অভিভাবক। দীর্ঘদিন জেলায় না থাকায় আমরা অভাব অনুভব করেছিলাম। একইসঙ্গে জেলায় অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল। তিনি ফিরে আসায় স্থিরতা ফিরবে। তিনি দ্রুত আগের মতো স্বমহিমায় ফিরুন, এটাই চাইছি। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)