নাবালিকাকে অপহরণ, রাজস্থান থেকে গ্রেপ্তার নাবালক ও তার মা
বর্তমান | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: সোশ্যাল মিডিয়ায় নাবালিকার সঙ্গে প্রেমের নাটক। পরে বিয়ের প্রস্তাব। দিল্লি থেকে পাঠানো হয়েছিল বিমানের টিকিট। প্রেমের টানে সাড়া দিয়ে নাবালিকার একাই বাগডোগরা থেকে বিমানে দিল্লি পাড়ি। এরপরেই অপহরণ করে ২০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি। ঘটনার পাঁচ দিনের মাথায় অপহরণের ষড়যন্ত্রের পর্দাফাঁস। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে রাজস্থানের জয়পুর থেকে উদ্ধার অপহৃতা নাবালিকা। ঘটনায় গ্রেপ্তার অপহরণ কাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড এক মহিলা ও এক নাবালক। মঙ্গলবার রাতেই ওই নাবালিকা সহ দুই অভিযুক্তকে জয়পুর থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে শিলিগুড়ি নিয়ে আসে মাটিগাড়া থানার স্পেশাল টিম। পুলিস জানিয়েছে, নাবালিকা অপহরণের মাস্টারমাইন্ড ওই মহিলার নাম প্রীতি শর্মা। ধৃত তার নাবালক ছেলেও। বুধবার প্রীতি ও তার ছেলেকে শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে তোলে পুলিস।
শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের ডিসিপি বিশ্বচাঁদ ঠাকুর সংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ওই নাবালিকা ১৯ সেপ্টেম্বর নিখোঁজ হয়। ২০ সেপ্টেম্বর পরিবার মিসিং ডায়েরি করে। মাটিগাড়া থানার পুলিস তদন্তে নামে। বিভিন্ন প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করে তদন্ত শুরু হয়। জানা যায় মেয়েটি দিল্লি যেতে পারে। সেই মোতাবেক বাগডোগরা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। সেখান থেকেই আমরা সূত্র খুঁজে পাই। দেখা যায় ১৯ তারিখ সন্ধ্যার একটি বিমানে নাবালিকা দিল্লি রওনা হয়েছে। যে ফোন নম্বর দিয়ে টিকিট কাটা হয়েছিল সেই নম্বরের লোকেশন নেওয়া হয়। দেখা যায় লোকেশন দিল্লি থেকে সরে জয়পুরে গিয়েছে। সেই অনুযায়ী আমাদের গোয়েন্দারা জয়পুরে চলে যায়। সোমবার জয়পুরের একটি হোটেল থেকে ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় প্রীতি শর্মা নামে এক মহিলা ও তার নাবালক ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযুক্তদের ট্রানজিট রিমান্ডে শিলিগুড়ি নিয়ে আসা হয়েছে। অভিযুক্ত মহিলার ১৪ দিনের পুলিস হেফাজত হয়েছে। ওই নাবালককে হোমে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় আর কেউ জড়িত কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নাবালিকাকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
পুলিস সূত্রের খবর, প্রথমে নাবালিকাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রেমের ফাঁদে ফেলে নাবালক। এরপর নাবালক তার মায়ের মদতে নাবালিকাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। বিমানের টিকিট পাঠিয়ে দিল্লি আসতে বলে। সেই মোতাবেক নাবালিকা ১৯ তারিখ সন্ধ্যায় বিমানে দিল্লি পৌঁছে যায়। এরপর সুপরিকল্পিতভাবে অভিযুক্ত মা-ছেলে নাবালিকাকে নিয়ে জয়পুরে গা ঢাকা দেয়। সেখান থেকেই বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যেমে নাবালিকার পরিবারের কাছে ২০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এদিকে, পুলিস নিখোঁজের মামলায় তদন্ত শুরু করলেও পরবর্তীতে মুক্তিপণের দাবিতে ফোন আসায় পুলিস প্রথমে ধন্দে পড়ে যায়। তদন্ত কিছুটা এগতেই পুলিসের কাছে গোটা ঘটনা স্পষ্ট হতে শুরু করে। এরপরেই তড়িঘড়ি একটি স্পেশাল টিম গঠন করে মাটিগাড়া থানার পুলিস। হাতেনাতে আসে সাফল্য। - নিজস্ব চিত্র।