• এবার থেকে ৪০ ডিগ্রিতেও বেড়ে উঠবে চা গাছ, আবিষ্কার নয়া বীজের
    বর্তমান | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়, কোচবিহার: চা বাগিচায় ঘেরা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আবহাওয়া কোনও দিনই চরম ছিল না। পাহাড়, অরণ্য বেষ্টিত এলাকা হওয়ায় গরমের দাপট চিরকালই কম। কিন্তু, বিধি বাম। গত কয়েক বছর ধরে এখানে গরমের প্রাবল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এবার তা চরমে পৌঁছেছে। আর এমনটা যে হতে পারে তা অনুমান করে বহু আগে থেকে গবেষণা চালিয়ে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি তাপমাত্রায় বেড়ে উঠতে পারে চা গাছের বীজ আবিষ্কৃত হয়েছে। 


    অসমের জোড়হাট ও নাগরাকাটার টি রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশন এই বীজ উৎপাদন করেছে। উৎপাদিত বীজ থেকে আগামী দিনে গাছের চারা উৎপাদন করা সম্ভব হবে। আর তা হলেই উত্তরের বহু চা বাগানেই সেই চারা রোপণ করা যাবে। যা আগামী চার-পাঁচ বছর পর বড় হয়ে উঠবে। 


    সাধারণত চা গাছ ৩৫-৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বেড়ে ওঠে। কিন্তু, তার বেশি তাপমাত্রা হলে সমস্যা হয়। এবার সেপ্টেম্বর মাসে ডুয়ার্সের বেশ কয়েকটি চা বাগানে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা উঠেছিল। আইটিপিএ’র ডুয়ার্স ব্রাঞ্চের সম্পাদক রামঅবতার শর্মা বলেন, ইন্ডিয়ান টি রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের ৬০ তম বার্ষিক সাধারণ সভায় ঘোষণা করা হয়েছে, ক্লাইমেট স্মার্ট টি সিড স্টক (টিএসএস-২) চায়ের বীজ ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে। অসমের জোড়হাট ও নাগরাকাটায় টিআরএ’তে সেই বীজ ল্যাবরেটরি থেকে সদ্য বের হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বাকিটা দেখবেন। 


    এই ধরনের পরিস্থিতি যে আসতে পারে তা অনুমান করে প্রায় ১২ বছর আগে থেকেই এমন বীজ উৎপাদনের জন্য প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল। তাতেই সাফল্য এসেছে। বহু বাগানেই বীজ উৎপাদনের জন্য আলাদা করে জায়গা থাকে। স্থানীয়ভাবে যাকে ‘সিড বাড়ি’ বলা হয়। সেইসব জায়গাতেই আগামী দিনে এই বীজ থেকে চারা উৎপাদন করা হবে। চা গাছের চারা বড় হয়ে তার থেকে পাতা তুলতে কয়েক বছর সময় লাগে। তাই সময় থাকতেই সেই চারা উৎপাদনের তোড়জোড় শুরু হচ্ছে। এরপর সেই চারা বিভিন্ন জায়গায় দেওয়া হবে। ফলাফল ভালো হলে এই ভাবে ধীরে ধীরে বহু বাগানেই নতুন উৎপাদিত বীজ থেকে হওয়া চারা গাছই হয়তো একসময় এই অঞ্চলের চা বাগানগুলিতে ছড়িয়ে যাবে। বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে যেভাবে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে তাতে এই নতুন বীজই হয়তো একসময় চা উৎপাদনের নতুন ভরসাস্থল হয়ে দাঁড়াবে বলে মানে করেন চা বাগানের মালিকরা। - নিজস্ব  চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)