প্রিয়র স্মৃতি বাঁচিয়ে রাখতে দুর্গাপুজো শুরু হোক, চাইছেন পাড়ার বাসিন্দারা
বর্তমান | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
মৃন্ময় বসাক, কালিয়াগঞ্জ: বন্ধ মূল ফটক। কালিয়াগঞ্জ শহরের শ্রীকলোনির বড় প্রাচীর দিয়ে ঘেরা বাড়িতে ছোট দরজা দিয়ে ঢুকতেই পেল্লাই মন্দির। এক প্রান্তে দুর্গা ঠাকুরের এক চালার কাঠামো। ফিকে হয়েছে মন্দিরের রং। খসে পড়ছে প্লাস্টার। শ্রী হারিয়ে নিস্তব্ধতায় ডুব দিয়েছে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির শ্রীকলোনির বাড়ি।
কালিয়াগঞ্জে একসময় প্রিয়র বাড়ির দুর্গাপুজো মানেই ছিল আনন্দ উৎসব, হৈ হুল্লোড়, অতিথিদের আনাগোনা। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা প্রিয়রঞ্জন অসুস্থ হওয়ার পর কয়েক বছর ঘটপুজো হলেও পরবর্তীতে সেটাও বন্ধ হয়ে যায়। সেখানে শুধুই নীরবতা। পুজো এলে মন ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে শ্রীকলোনির বাসিন্দাদের। বিষাদের ছায়ায় আচ্ছন্ন থাকে দাশমুন্সি বাড়ি ও পাড়া। তবে প্রিয়র স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে পুনরায় দুর্গাপুজো শুরু হোক, চাইছেন পাড়ার বাসিন্দারা। পেশায় শিক্ষক স্থানীয় বাসিন্দা প্রদীপ কুমার পাল বললেন, প্রিয়দার বাড়ির পুজো আমাদের কাছে মহোৎসব ছিল। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকার মানুষ অংশ নিতেন। সেসব দিনের কথা মনে পড়লে এখন কষ্ট হয়। রথের দিন প্রতিমা তৈরি দিয়ে পুজোর প্রস্তুতি শুরু হতো। প্রিয়দা না থাকলেও ফের পুজো শুরু করলে তাঁর স্মৃতি বেঁচে থাকবে। বাসিন্দারাও সেটা চাইছেন।
পাড়ার বাসিন্দা কলেজ ছাত্রী প্রেরণা পালও ফের পুজো শুরুর পক্ষে। তাঁর কথায়, এই পুজো দেখে বড় হয়েছি। এখন দূরের মণ্ডপে অঞ্জলি দিতে যেতে হয়। মন্দির ফাঁকা পড়ে রয়েছে। সেই পুজো শুরু হলে ভালোই লাগবে।
পূজোর দিনে আলোয় ভরা মণ্ডপে দেবীর সামনে ঢাক বাজানো থেকে শুরু করে স্ত্রী দীপাকে নিয়ে ধুনুচি হাতে আরতি করতেন প্রিয়রঞ্জন। ষষ্ঠীতে দুঃস্থদের বস্ত্র বিতরণ, নবমীর দুপুরে দীপা দাশমুন্সির খিচুড়ি বিতরণ এখন স্মৃতি। প্রিয়রঞ্জন অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই ফিকে হতে শুরু করেছিল এই পুজো। ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর তাঁর প্রয়াণের পর থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছে বাড়ির দুর্গাপুজো।
প্রবীণ কংগ্রেস নেতা ও স্থানীয় বাসিন্দা সুজিত দত্ত বলেন, প্রিয়দা বেঁচে থাকার সময় পুজো ঘিরে প্রচণ্ড ব্যস্ত থাকতাম। দাদা ষষ্ঠীতে বস্ত্র বিতরণ করতেন। সেই ব্যবস্থা আমাকেই করতে হত। প্রিয়দার বাড়ির কেউ এখন এখানে থাকেন না বলে পুজো হয় না। স্থানীয়দের পাশাপাশি আমিও চাই ফের পুজো চালু হোক। এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে চেয়ে প্রয়াত কংগ্রেস নেতার স্ত্রী দীপা দাশমুন্সিকে ফোন করা হলে তিনি উত্তর দেননি। মেসেজেরও জবাব দেননি। তবে জেলা কংগ্রেসের সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, আমরা মনেপ্রাণে চাই পুজোটা ফের চালু হোক। -নিজস্ব চিত্র