নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ ও সংবাদদাতা, মানিকচক: গঙ্গায় নজিরবিহীন জলস্ফীতির পর প্লাবন পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে দুর্গতদের। রিং বাঁধ তৈরির সময় সেচ দপ্তরের লঞ্চে হামলার চেষ্টার অভিযোগ উঠল ভূতনিতে। গ্রামবাসীদের একাংশের ‘তাড়া খেয়ে’ কাজ বন্ধ রেখে ফিরে যেতে বাধ্য হলেন দপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা। বুধবার এনিয়ে তড়িঘড়ি বৈঠক ডাকেন সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। মানিকচক বিডিও অফিসে জেলাশাসক ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলিকে নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। বৃহস্পতিবার থেকে পুনরায় কাজ শুরু করা হবে বলে জানান সাবিনা। তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বিশেষ পরিদর্শক দল বৃহস্পতিবার সকালে মানিকচকের জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শন করবে ।
সেচ দপ্তরের লঞ্চে হামলার চেষ্টায় ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে শাসকদল। সেচ প্রতিমন্ত্রীর দাবি, হামলার চেষ্টার পিছনে রয়েছে বিরোধী দল। তারা চাইছে বাঁধের কাজটা না হলেই ভালো। তাতে সরকারের বদনাম হবে। তবে কাজ বন্ধ হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে ফের কাজ শুরু হবে।
সেচ দপ্তরের মালদহ জেলার নির্বাহী বাস্তুকার শিবনাথ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, আমাদের লোকজন কাজ করছিলেন। সেই সময় দেড়শো দুশো গ্রামবাসী চলে আসেন। তাঁরা অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছিলেন। এরপর আমাদের কর্মীরা কাজ বন্ধ করে চলে আসেন।
সেচদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ভূতনির কেশরপুর কলোনিতে একটি লঞ্চের মধ্যেই দপ্তরের ছয় জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার শিবির করেছিলেন। তাঁরা পরিস্থিতি বেগতিক দেখে লঞ্চ নিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন।
দিন চারেক আগে ভূতনির উত্তর ও দক্ষিণ চণ্ডীপুর এবং হীরানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েক হাজার মানুষ ‘ভূতনি বাঁচাও’ নামে একটি মঞ্চ গঠন করেন। মঞ্চের সদস্য রাজু বিশ্বাস এদিন বলেন, তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতে গঙ্গার জল ঢুকে গিয়েছে। আমরা গত দু’মাস ধরে ভাসছি। এখন নদীতে বালির বস্তা ফেলে কেন টাকা অপচয় করা হচ্ছে? এটা বলতেই আমরা সেচ দপ্তরের লঞ্চের দিকে যাচ্ছিলাম। সেখানে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের জমায়েত ছিল। কিন্তু আমাদের দেখেই একটি লঞ্চ ও কয়েকটি নৌকা নিয়ে সেচ দপ্তর এবং ঠিকাদার সংস্থার লোকেরা পালিয়ে যান। আমরা কোথাও হামলা করিনি। স্থানীয়দের দাবি, গঙ্গায় স্থায়ী বাঁধ দিতে হবে। এই প্রসঙ্গে সাবিনার মন্তব্য, বর্ষায় জলের স্রোত আটকাতে অস্থায়ীভাবে বালির বস্তা দিয়েই কাজ করা হয়। (বৈঠকে মন্ত্রী-জেলাশাসক। - নিজস্ব চিত্র।)