হিলি সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিতে বিএসএফকে বাধা বিজিবির
বর্তমান | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, বালুরঘাট: দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে মতানৈক্য। পাচার ও অনুপ্রবেশ রুখতে হিলিতে উন্মুক্ত সীমান্তে অস্থায়ী বেড়া দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল বিএসএফ। বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি সেই কাজে বাধা দেওয়ায় দুই দেশের জওয়ানদের মধ্যে দ্বন্দ্ব।
বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি ব্লকের জামালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গোঁসাইপুর থেকে মথুরাপুর পর্যন্ত প্রায় দুই কিমি এলাকায় সীমান্তে কাঁটাতার নেই। সেই এলাকা দিয়ে দুই দেশের পাচারকারীরা দেদার পাচার চালিয়ে যাচ্ছিল। পাশাপাশি, বাংলাদেশে সম্প্রতি ডামাডোলের জেরে ভারতে অনুপ্রবেশের প্রবণতাও বাড়ছিল। বাড়তি সতর্ক হয়ে বিএসএফ উন্মুক্ত সীমান্তগুলিতে অস্থায়ীভাবে কাঁটাতার বসানোর উদ্যোগ নেয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী,সোমবার থেকে বিএসএফ একাধিক জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া বসানোর কাজ শুরু করে। কিন্তু দু’দিন দফায় দফায় জওয়ানদের বাধা দেয় বিজিবি। ফলে বেশকিছু এলাকায় কাঁটাতার বসানো যায়নি। দুই দেশের শীর্ষকর্তাদের কাছে খবর পৌঁছলে ফ্ল্যাগ মিটিং ডাকা হয় বলে বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে। যদিও বৈঠকে কোনও সমাধানসূত্র মিলেছে কি না, সে বিষয়ে বিএসএফ কিছু খোলসা করেনি।
বিএসএফের ১৩৭ ব্যাটালিয়নের আধিকারিক হৃদয় রাজ বলেন, উন্মুক্ত সীমান্তগুলি দিয়ে যাতে কোনওভাবে পাচার না হয়, সেজন্য আমরা অস্থায়ী কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। কিন্তু সেই কাজ করতে গেলে বাংলাদেশের জওয়ানরা বাধা দিচ্ছেন। ফ্ল্যাগ মিটিং হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সমাধানসূত্র পাওয়া যাবে।
হিলির জামালপুর গ্রামের গোঁসাইপুর থেকে মথুরাপুর প্রায় কয়েক কিলোমিটার এলাকায় কাঁটাতার নেই। রাস্তার ধারে সীমান্ত হওয়ার কারণে পাচারকারীরা অনায়াসে বিভিন্ন সামগ্রী পাচার করে। তাছাড়া, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক অস্থিরতার জেরে সীমান্তে যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেদিকে নজর দিয়েই একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে বিএসএফ। কিন্তু বিজিবির বাধায় এখন সেসব কীভাবে এগোবে প্রশ্ন উঠছে। কাঁটাতার দেওয়ার প্রতিবাদে সীমান্ত লাগোয়া ওপার বাংলার বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁদের দাবি, এই এলাকায় কাঁটাতার দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। যদিও বিএসএফ পিছু হাটতে নারাজ। তারা যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে কাজ শেষ হলে হিলির এই সীমান্ত দিয়ে পাচার সম্পূর্ণ বন্ধ হবে বলে মনে করছেন বাসিন্দারা। (মথুরাপুরের খোলা সীমান্ত। - নিজস্ব চিত্র।)