২০ দিন ধরে বন্ধ পরিবহণ, পুজোর মুখে দক্ষিণবঙ্গে জ্বালানি সংকটের আশঙ্কা
প্রতিদিন | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: মাত্র ১৫০ লিটার তেলের বরাদ্দ নিয়ে বিবাদ ট্রাক মালিক ও চালকদের। পুজোর মুখে জ্বালানি গ্যাসের সংকটের আশঙ্কা দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে। কিলোমিটার প্রতি তেলের বরাদ্দ বাড়ানোর দাবিতে রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস বটলিং সংস্থার ট্রাক বন্ধ রেখে প্রতিবাদে চালকরা। প্রায় ২০ দিন ধরে এই বিবাদের জন্য বন্ধ পরিবহণ। পুজোর মুখে জ্বালানি গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় জ্বালানি গ্যাসের টান ধরেছে একাধিক জেলায়। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালানো হচ্ছে, দাবি তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন নেতৃত্বের। শ্রমিকদের সমস্যা মেটাতে ব্যর্থ, আর ভাগবাটোয়ারা নিয়ে ব্যস্ত তৃণমূল। এমনই কটাক্ষ বিজেপির।
দুর্গাপুরের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের লেনিন সরণিতে ইন্ডিয়ান অয়েল বটলিং প্লান্ট। সেখান থেকে প্লান্টে জ্বালানি গ্যাস সরবরাহের জন্য রয়েছে বহু গ্যাস ট্যাঙ্কার-সহ ২৫০ টি ট্রাক। ২০২৩ সালের জুলাই মাস থেকে ১০ বছরের জন্য ট্রাকের মাধ্যমে জ্বালানি গ্যাস পরিবহণের চুক্তি হয় চালকদের সঙ্গে। সেই চুক্তিতে এক লিটার ডিজেল পিছু ৩.৬৫০ কিলোমিটার বরাদ্দ করা হয়। কয়েক মাস ধরে চালকদের দাবি, লিটার পিছু ৩.৫ মিটারের জন্যে জ্বালানির টাকা দিতে হবে। ট্রাক মালিকপক্ষ চালকদের দাবি না মানায় ৩৩টি গ্যাস ট্যাঙ্কার পরিবহণ বন্ধ করে দেন চালকরা।
ট্রাক মালিক তপন কুমার সাহার দাবি, “যখন চুক্তি হয়েছিল তখন তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন সভাপতি সেই চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেছিলেন। এক বছরের বেশি সময় ধরে পরিষেবা সঠিক থাকলেও হঠাৎ করে চালকরা এই সিদ্ধান্ত নেওয়ায় জ্বালানি গ্যাস সরবরাহের সমস্যা দেখা দিয়েছে। ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে আমাদের। জ্বালানি গ্যাসও গাড়িতেই। এই সমস্যার কথা শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতিকেও বিষয়টি জানানোর পরেও কোন গুরুত্ব দিচ্ছেন না।” ট্রাক চালক সুমিত লায়েক বলেন, “চুক্তি হয়েছিল ঠিকই কিন্তু ট্রাকে বেশি গ্যাস সিলিন্ডার চাপানোর জন্য ট্রাকের যান্ত্রিক গোলযোগ হচ্ছে। তাই তেলের বরাদ্দ বাড়ানোর কথা বলছি আমরা। আমাদের দাবি না মানা হলে ট্রাক চালানো সম্ভব নয়।”
জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় কটাক্ষ করে বলেন, “সবই তৃণমূলের অন্দরে কাটমানি নিয়ে দ্বন্দ্ব। শ্রমিকরা সমকাজে সমবেতন না পেয়ে প্রতিবাদ করছেন। আর শ্রমিকের সমস্যা সমাধান করতে ব্যর্থ শ্রমিক সংগঠন।” দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের ৩ নম্বর ব্লক সভাপতি কল্লোল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই ধরনের কর্মকাণ্ড যারা করছেন, তাদের উপর নজর রয়েছে আমাদের। তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতিও বিষয়টি দেখছেন। দ্রুত সমস্যার যাতে সমস্যা হয় সেই ব্যবস্থাও করা হবে।”