• পর পর দুই কন্যা, পুজোর আগে বাপেরবাড়িও ফেরা হবে না দুর্গার
    এই সময় | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • এই সময়: অপরাধ? পরপর দু’টি কন্যা সন্তান প্রসব। তাই তাঁকে বাড়ি ফেরাতে নারাজ শ্বশুরবাড়ি। মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন বাপের বাড়ির লোকেরাও! পুজোর আগে তাই ‘দুর্গা’র আর বাড়ি যাওয়া হচ্ছে না! আপাতত তাঁকে থাকতে হবে হোমেই!চলতি বছরের গোড়ায় উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিলেন দুর্গা (নাম পরিবর্তিত)। রাতে ফুটপাথেই শুয়ে থাকছিলেন। ভিক্ষা করে চলছিল দিন গুজরান। স্থানীয়রা ভেবেছিলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন। রাতবিরেতে এ ভাবে একা ফুটপাথে শুয়ে থাকা যুবতীকে ঘিরে আশঙ্কা ঘনালে খবর যায় থানায়। পুলিশ তাঁকে বারাসত আদালতে পেশ করে। তাঁর ঠাঁই হয় মধ্যমগ্রামের একটি হোমে।

    জানা যায়, তিনি গর্ভবতী। দিশাহীন, পরিজনহীন কোনও মহিলাকে হোমে আনলে প্রথমেই তাঁর মেডিক্যাল পরীক্ষা করাটাই নিয়ম। সেখানেই ধরা পড়ে, তাঁর বয়স ২২ বছর, সাবালিকা। তাঁকে তড়িঘড়ি পাঠানো হয় বিধানগরের একটি হোমে। মধ্যমগ্রামের হোম কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছিল, দুর্গা পাঁচ মাসের গর্ভবতী। পরে মেডিক্যাল পরীক্ষায় জানা যায়, গর্ভাবস্থায় আট মাস পেরিয়ে গিয়েছে।

    বিধাননগর হোম কর্তৃপক্ষের দাবি, সেখানে আসার পরে কিছুদিনের মধ্যেই তিনি বাড়ি যাওয়ার জন্য কান্নাকাটি শুরু করেন। জানান, বাড়িতে তাঁর দুটো মেয়ে রয়েছে। তাদের জন্য মন কেমন করছে। কিন্তু, কোথায় তাঁর বাড়ি? সঠিক করে বলতে পারেননি তিনি। হোম কর্তৃপক্ষ হ্যাম রেডিওর ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবকে বিষয়টি জানায়।

    ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগ বিশ্বাসের কথায়, ‘খোঁজ শুরু হলে জানা যায়, তাঁর বাপেরবাড়ি বিহারের পশ্চিম চম্পারণ জেলায়। অগস্টের শেষে সেখানে লোক পাঠাই। হাত উল্টে নিজের আত্মীয়রা বলেন, কে বলল আমাদের মেয়ে হারিয়ে গিয়েছে? সে তো শ্বশুরবাড়িতে আছে। ছবি দেখানোর পরে মেয়েটির বাবা বলেন, পর পর দুটো মেয়ে হয়েছে বলে শ্বশুরবাড়িতে খুব অত্যাচার করত। আমাদেরও মারতে এসেছিল। আমরা এর মধ্যে আর ঢুকতে চাই না।’

    হ্যাম রেডিওর প্রতিনিধিরা শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে দেখেন, দুর্গার স্বামী বাড়িতে নেই। তালা মারা। গ্রামের লোক বলেন, সম্ভবত কাজে গিয়েছেন। সেখান থেকে আবার মেয়ের বাপের বাড়িতে গিয়ে দেখেন, ততক্ষণে সবাই চম্পট দিয়েছেন। প্রশ্ন, গর্ভবতী অবস্থাতেই কি বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন দুর্গা? নাকি.........
  • Link to this news (এই সময়)