পুজোর মুখে বন্ধ রাজ্যের আরও একটি জুটমিল, কর্মহীন কয়েকশো শ্রমিক
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
আগামী মাসে দুর্গাপুজো। তার আগে বন্ধ হয়ে গেল রাজ্যের আরও একটি জুট মিল। তারফলে কর্মহীন হয়ে পড়লেন জুট মিলের কয়েকশো শ্রমিক। সব মিলিয়ে প্রায় ৬০০ জনেরও বেশি শ্রমিক পুজোর আগে কাজ হারালেন। অভিযোগ, পুজোর বোনাস তো দূরের কথা বেতন পর্যন্ত পাননি তারা। এভাবে হঠাৎ জুটমিল বন্ধ হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন শ্রমিকরা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে জুটমিলের সামনে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা।
জানা গিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার সকালে কর্মীরা কাজে যোগ দিতে গিয়ে দেখেন গেটে সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক নোটিশ বা কাজ বন্ধের নোটিশ টাঙানো রয়েছে। এরপর ক্ষোভে ফেটে পড়েন শ্রমিকরা। গেটের সামনেই তারা বিক্ষোভ করতে শুরু করবে। শ্রমিকদের অভিযোগ, ওই মিলের তাঁত বিভাগের শ্রমিকদের অতিরিক্ত কাজ করানোর জন্য চাপ দিচ্ছিল মালিক পক্ষ। গত কয়েকদিন ধরে দুটো তাঁত মেশিনের বদলে চারটে মেশিন চালানোর জন্য ওই বিভাগের শ্রমিকদের ওপর রাজ্য শাসকদলের ইউনিয়ন এবং ম্যানেজমেন্ট চাপ দিতে থাকে। কিন্তু, শ্রমিকরা জানিয়ে দেন, তাদের পক্ষে চারটি মেশিন চালানো অসম্ভব। গতকাল এই নিয়ে তারা কর্তৃপক্ষের সামনে প্রতিবাদ জানায়। তারপর আজ সকালে কর্মবিরতির কথা ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। কর্মীদের আরও অভিযোগ, ওই মিলে সব ধরনের আর্থিক সুযোগ-সুবিধা থেকে তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছিল।
এদিকে, মিল কর্তৃপক্ষ নোটিসে উল্লেখ করেছে তাঁত বিভাগের কর্মীদের বারবার বলা সত্ত্বেও তারা উৎপাদনে নজর দেয়নি। এর ফলে অন্য বিভাগের উৎপাদন মার খেয়েছে। তাই মিলে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তী নোটিশ না দেওয়া পর্যন্ত মিলের কাজকর্ম বন্ধ থাকবে। পুজোর মুখে হঠাৎ কর্মীরা এই নোটিস দেখতে পেয়ে তাদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। তারা বুঝে উঠতে পারছেন না কীভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দেবেন। তারা চাইছেন আলোচনার মাধ্যমে মিল কর্তৃপক্ষ ফের চালু করুক মিল।
এর আগে গত সপ্তাহে উত্তর ২৪ পরগনার কাকিনাড়ার একটি জুট মিল বন্ধ হয়ে যায়। তারফলে কর্মহীন হয়ে পড়েন কারখানার প্রায় তিন হাজার স্থায়ী অস্থায়ী শ্রমিক। শ্রমিক-মালিক অসন্তোষের জেরে কাকিনাড়ার নফর চাঁদ জুট মিলে উৎপাদন বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। পুজোর মুখে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন ওই মিলের শ্রমিকরাও। গত শনিবার মিলের ভিতরে শ্রমিক-মালিক অসন্তোষের চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। তারপরে উৎপাদন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে কর্তৃপক্ষ।
অভিযোগ ওঠে, শ্রমিকদের নতুন বিভাগে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। যারফলে পুরানো বিভাগ থেকে নতুন বিভাগে গিয়ে তারা কাজ করতে পারছেন না। এনিয়ে কর্তৃপক্ষকে জানাতে গেলেই রিজাইন দিয়ে বাড়ি চলে যেতে বলছেন তারা। আগামী ২ অক্টোবর থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত মিল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।