• সিউড়িতে এবার একই ওয়ার্ডে তিনটি মহিলা পরিচালিত পুজোর দিকে নজর
    বর্তমান | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউডি: শুধু সংসার বা অফিস সামলানো নয়, মহিলারাও যে জাঁকজমকভাবে বারোয়ারি পুজো করতে পারেন, সেটা কয়েকবছর ধরে দেখিয়ে দিচ্ছে সিউড়ির ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের তিনটি পুজো কমিটি। পুজোর খরচপাতি জোগাড় করা থেকে শুরু করে ঢাক বাজানো সহ পুজোর যাবতীয় দায়িত্ব, সমস্ত কিছুই সামলান মহিলারা। একই ওয়ার্ডের ওই ৩টি মহিলা পরিচালিত পুজোর দিকে তাই এবার নজর সবার। একে অপরের সঙ্গে লড়াইয়ের থেকেও বেশি ‘আমরাও পারি’ এই বার্তা তুলে ধরতে উদ্যোগী তাঁরা। উল্লেখযোগ্য বিষয়, একটি পুজো কমিটির থিমে এবার শোভা পাবে সুকুমার রায়ের সাহিত্য।


    রবীন্দ্রপল্লি ঐক্য মহিলা পরিচালিত পুজো এবার পাঁচ বছরে পা দিল। পাশাপাশি বসবাস করা বাড়ির মহিলারা নিজেদের মধ্যে ‘ঐক্য’বদ্ধ হয়ে ২০২০ সাল থেকে এই পুজো শুরু করেছিলেন। সিদ্ধান্ত হয়েছিল, পুরুষরা সহযোগিতা করলেও পুজোর সমস্ত কিছুর দায়িত্বে সামলাবেন মহিলারাই। ঘট তোলা থেকে চাঁদা তোলা সমস্ত কিছুই মহিলাদের কাঁধে। এবারও গত বছরের মতো জাঁকজমকভাবেই ঐক্য গোষ্ঠী পুজোর আয়োজন করেছে। এবার বাড়তি সংযোজন, থিমের ছোঁয়া। সুকুমার রায় সাহিত্যের চরিত্রগুলিকে সাজিয়ে পুজোমণ্ডপকে আকর্ষণীয় করে তোলা হচ্ছে। ‘আবোল-তাবোল’ এর বিভিন্ন চরিত্র যেমন, খুড়োর কল, কুমড়ো পটাশ, কাতুকুতু বুড়ো চরিত্রগুলি ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। শহরের নামী শিল্পী সৌরেন্দ্রনাথ ভাণ্ডারীর ছোঁয়ায় এবার সাদা, কালো থিমে সাহিত্যির ছোঁয়া পাচ্ছে ঐক্যর পুজোমণ্ডপ। ক্লাবের সভাপতি দীপান্বিতা মণ্ডল, সম্পাদক কথাকলি বসাক বলছিলেন, ৪ বছরেই আমরা শহরের বুকে নাম করেছি। মহিলারা যে হেঁসেল থেকে পুজো— সবই সামলাতে পারি, তা দেখিয়ে দিচ্ছি। চাঁদা তুলতে গেলে নানা বিদ্রুপ শুনতে হয়, কিন্তু আমরা পিছিয়ে যাইনি। রাজ্য সরকার আর্থিক অনুদানে আমরা খুশি। পুজোর চারদিনই নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকছে। আশা রাখি, এবারও প্রচুর দর্শনার্থী আসবেন। 


    এর থেকে খানিক দূরেই সুভাষপল্লি ঘোষপাড়া মহিলা পরিচালিত পুজোও থাকছে অনেকের নজরে। ২০১৯ সাল থেকে এই পুজো শুরু হয়। পাড়ার কয়েকজন মহিলা পুজোর সবকিছুর দায়িত্ব সামলান। থিমের জাঁকজমক না থাকলেও ঘরোয়াভাবে পুজো হয়। সভাপতি চন্দনা দত্ত, সম্পাদক সোমা মুখোপাধ্যায় বলেন, আমাদের বাজেট বিশাল হয়তো নয়, কিন্তু সকলের আন্তরিকতা আছে। মহিলারাই ঘট তোলা, বিসর্জন করা সবকিছুই সামলান। এমনকী এখানে এবার মহিলারাই ঢাক বাজাবেন। 


    এই মণ্ডপ থেকে একটু দূরে রবীন্দ্রপল্লির রবীন্দ্র পরিবার দুর্গোৎসব কমিটি (আদি) শহরের মহিলা পরিচালিত পুজোগুলির মধ্যে সবথেকে পুরনো। এবছর তারা ৩০ বছরে পা রাখল। সভাপতি রেণুকা দত্ত, সম্পাদক পূর্ণলক্ষ্মী রায়রা অক্লান্ত পরিশ্রম করে এবারও উমাদেবীর আরাধনা করতে সবদিক থেকে প্রস্তুত। এখানেও সবকিছুর দায়িত্বে সেই বাড়ির মহিলারাই। তাঁদের দাবি, মা দুর্গতিনাশিনী যেভাবে সবাইকে রক্ষা করছেন, তেমনই মহিলারা সংসার থেকে অফিস, রাজ্য থেকে পাড়ার পুজো সবই সামলাচ্ছেন। ফলে বলাই যায়, এবার সিউড়ির ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের তিনটি মহিলা পরিচালিত পুজো থাকবে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে। কে কাকে টেক্কা দেয়, এখন সেটাই দেখার।
  • Link to this news (বর্তমান)