• টানা বৃষ্টিতে পচন পদ্মের কুঁড়িতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন দুর্গাপুরের চাষিরা
    বর্তমান | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, দুর্গাপুর: দেবী দুর্গার আরাধনায় অন্যতম প্রধান উপকরণ ১০৮টি পদ্ম। ক’দিন পরেই হয় লক্ষ্মীপুজোও। এই সময় পদ্মের চাহিদা থাকে তুঙ্গে। তাই একটু মুনাফা লাভের আশায় সারাবছর দু্র্গাপুজোর দিকে তাকিয়ে থাকে পদ্ম চাষিরা। তবে সেই আশায় এবার জল ঢালল দফায় দফায় আসা নিম্নচাপের বৃষ্টি। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে জল উপচে পড়েছে বহু পুকুরের। ফলে পচন ধরছে পদ্মের কুঁড়িতে। তাই টানা বৃষ্টিতে কিছুটা মনখারাপ দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল সহ বাঁকুড়া ও বীরভূমের পদ্মচাষিদের।


    পদ্মচাষি ও ফুল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে দু’হাজারেরও বেশি দুর্গাপুজো হয়ে থাকে। এখানে পুজোর সময় পদ্মের চাহিদ থাকে ২লক্ষেরও বেশি। দুর্গাপুর বাজারের নন্দন মার্কেটে ফুল মজুত করেন ব্যবসায়ীরা। বাঁকুড়া, বীরভূম ও দুর্গাপুরের কাঁকসা থেকে মূলত পদ্মের জোগান আসে। এছাড়াও বিভিন্ন জেলার পদ্মফুল কলকাতা হয়ে দুর্গাপুরে আসে।


    বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি এলাকার পদ্মচাষি জগন্নাথ লোহার বলেন, আমি প্রায় ১০বছর ধরে পদ্মফুল চাষ করছি। ৩২টি পুকুরে আমি পদ্মচাষ করেছিলাম। গত বছর দুর্গাপুরের বাজারে ৭৫হাজার পদ্মফুল দিয়েছিলাম। এক একটি পদ্ম প্রায় ৪০টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এই বছর আবহাওয়ার পরিস্থিতি বুঝে মাত্র ৩০হাজার পদ্মের বায়না নিয়েছি। বিশ্বকর্মা পুজোর আগে থেকে কয়েক হাজার পদ্মফুল তুলে হিমঘরে মজুত করেছি। হিমঘরে এক হাজার পদ্মফুল রাখতে ১৬০০টাকা খরচ হয়। বাজারের চাহিদা থাকলে এবার ভালো দাম পাওয়া যাবে বলে ধারণা করছি। তবে চেন্নাই, বেঙ্গালুরু ও ঝাড়খণ্ড থেকে পদ্ম আনছে বেশকিছু ব্যবসায়ী। সেক্ষেত্রে জোগান বেশি হয়ে গেলে বাজারের চাহিদা কমবে। পদ্মের দামও তখন কমে যেতে পারে। উভয়সংকটে রয়েছি আমরা। 


    কাঁকসার পদ্মচাষি মধুসূদন কর্মকার বলেন, ১১টি পুকুরে পদ্মচাষ করেছি। পদ্মগাছ জলের তলায় চলে গিয়েছে। অধিকাংশ কুঁড়ি জলে পচে যাচ্ছে। এবার ১৮হাজার পদ্মফুলের অর্ডার রয়েছে। চড়া দামে আমাকে পদ্মফুল কিনে পুজো উদ্যোক্তাদের দিতে হবে। এছাড়াও ওই সব পদ্ম পুকুরের মালিকদের টাকা দিতে হবে। 


    দুর্গাপুরের পদ্মফুলের পাইকারি ব্যবসায়ী আনন্দ বিশ্বাস বলেন, আশপাশের জেলার প্রায় কোনও চাষির কাছেই পদ্মফুল নেই। ভিন রাজ্য থেকে জোগান আসলেও এবার পদ্মের দাম থাকবে বেশ চড়া। খুচরো বাজারে হিমঘরে মজুত রাখা পদ্ম ফুলের দাম বাড়বে। যদি হিমঘরে পদ্মফুল পচে যায় তাহলে দাম নাগালের বাইরে চলে যাবে।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)