• স্বামীর মৃত্যুর পর প্রতিমা গড়েই সংসার চলে বাসন্তীর
    বর্তমান | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, পুরাতন মালদহ: যিনি রাঁধেন, তিনি চুলও বাঁধেন। এই প্রবাদবাক্য আবারও প্রমাণ করে দেখালেন পুরাতন মালদহের নলডুবির মৃৎশিল্পী বাসন্তী দাস। ত্রিশ বছর ধরে দুর্গা প্রতিমা গড়ছেন বছর পঞ্চাশের এই বাসন্তী। বছর সাতেক আগে তাঁর স্বামী মারা গিয়েছেন। তিনিও পেশায় মৃৎশিল্পী ছিলেন। স্বামীর মৃত্যুর পর এখন সব দায়িত্ব এবং কর্তব্য বাসন্তীদেবীর কাঁধে। সংসারের হাল ধরতে মৃৎশিল্পীর পেশাকেই আঁকড়ে ধরে রেখেছেন। এবার তিনি চারটে বড় প্রতিমা বানানোর অর্ডার পেয়েছেন। তিনটি বানাচ্ছেন প্রতিবেশীর বাড়িতে। আর একটি বানাচ্ছেন ১০ কিমি দূরে ইংলিশবাজার গয়েশপুরে গিয়ে। এখন নিজের ২০ বছরের ছেলেকেও মূর্তি তৈরি শেখাচ্ছেন। ছেলেও তাঁকে যথেষ্ট সহযোগিতা করছেন। তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়ে একমাত্র ছেলেকে নিয়ে মৃৎশিল্পীর পেশাকে আঁকড়ে ধরে জীবনযুদ্ধে টিকে রয়েছেন। বাসন্তীদেবীর এই লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছেন স্থানীয়রা। মঙ্গলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের নলডুবি বাগানপাড়ায় বাসন্তীর বসবাস। তাঁর মূর্তি বানানো শেখা স্বামী কৃষ্ণ দাসের কাছে। স্বামী মারা যাওয়ার পর খুব কষ্টে সংসার চলে। স্থানীয় বাসিন্দাদের পরামর্শে তিনি এই পেশা ধরে রেখেছেন। নিজস্ব জায়গা নেই। অন্যের বাড়িতে প্রতিমা গড়ছেন। বছরভর কালী, মনসা সহ বিভিন্ন প্রতিমা গড়েন। অনেক মহিলাকে প্রতিমা তৈরিতে উৎসাহ দেন। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেন না। তাই নিজের ছেলে কিশোর দাস (গবলু) তাঁকে সহযোগিতা করেন।  এদিন গিয়ে দেখা গেল, বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে প্রতিমা গড়ছেন বাসন্তী। কাজ করতে করতেই মাথা নিচু করে বললেন, স্বামীর হাত ধরে মূর্তি গড়া শেখা। এই শিক্ষা দিয়েই এখন আমাদের পেট চলে। বাসন্তীর আক্ষেপ, সারাবছর কাজ থাকে না। যখন অর্ডার পাই, করি। খুব কষ্টে সংসার চলে। তবুও ছেলেকে মূর্তি গড়া শেখাচ্ছি। ওর সাহায্য নিয়েই এগিয়ে চলছি।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)