• দীর্ঘ টানাপোড়েন শেষে ভোটের দাবি মেনে নিল মেট্রো কর্তৃপক্ষ
    বর্তমান | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: দেশে একমাত্র কলকাতা মেট্রো পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ভারতীয় রেল। একই সঙ্গে প্রতিবছর লোকসানের বহর বাড়িয়ে রেলের ধারাবাহিক আর্থিক ক্ষতি করছে এই সংস্থা। কর্মচারী সংগঠনগুলির অভিযোগ, কিছু অদক্ষ অফিসারের সৌজন্যে কলকাতা মেট্রোর এই দুরবস্থা। বৃহস্পতিবার তা আরও একবার প্রমাণিত হল। কর্মীদের ন্যায্য দাবির কাছে মাথা নোয়াতে বাধ্য হল কলকাতা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। মেট্রো ভবনের কর্মীদের দাবি, সংস্থার উপর মহলের একাংশের স্পষ্ট রাজনীতিকরণ হয়েছে। তার জেরে আজ শুক্রবার হতে চলা মেট্রো রেলওয়ে রিক্রিয়েশন ক্লাবের ভোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। বুধবার এই সিদ্ধান্তের জেরে মেট্রো সদর দপ্তরে ইলেকশন অফিসার সহ একাধিক মেট্রো কর্তা ঘেরাও হয়ে ছিলেন। কর্মীদের বক্তব্য, বেআইনি এই ভোট বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। সাধারণ কর্মচারীদের চাপে বৃহস্পতিবার তা মেনে নেন মেট্রো কর্তারা। এদিনই ইলেকশন অফিসার তথা ডেপুটি চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার রাকেশ কুমার আগামী ৪ অক্টোবর রিক্রিয়েশন ক্লাবের পরবর্তী ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করেন।


    এ প্রসঙ্গে কলকাতা মেট্রোর প্রগতিশীল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক শম্ভুনাথ দে বলেন, সত্যের জয় হল। কলকাতা মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজারের চারপাশে থাকা কিছু অফিসার গত একবছরের বেশি সময় ধরে ওঁকে নানাভাবে বিভ্রান্ত করছেন। সরকারি নিয়ম-কানুন ভেঙে সাধারণ মেট্রো কর্মীদের উপর চূড়ান্ত অত্যাচার করছেন। কলকাতা মেট্রোর অন্দরে ‘থ্রেট কালচার’ চলছে বলেও বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন শম্ভুবাবু। তাঁর দাবি, কর্মীদের সার্বিক উন্নয়ন কিংবা নতুন নিয়োগ হচ্ছে না। একজন স্টেশন মাস্টারকে দিয়ে একাধিক স্টেশন পরিচালনা করা হচ্ছে। টিকিট কাউন্টার তুলে দিয়ে প্রযুক্তি নির্ভর ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে প্রতিটি স্টেশনের স্টাফদের চাপ দিয়ে অনলাইন ব্যবস্থায় দৈনিক টিকিট মূল্যের টার্গেট ধরানো হচ্ছে। নন-টেকনিক্যাল লোকদের জোর করে গুরুত্বপূর্ণ টেকনিক্যাল কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। এসব না শুনলে অন্যত্র বদলির ‘থ্রেট’ চলছে। একই সঙ্গে মেট্রো স্টেশনগুলিতে একাধিক বাণিজ্যিক সংস্থার বিবিধ উপকরণ ও বিপণন যজ্ঞ চলছে। এই বরাত পেতে মেট্রো ভবনের কয়েকটি টেবিলে ‘ভেট’ দিতে হয় বলেও দাবি ওই কর্মচারী নেতা। সবমিলিয়ে কলকাতা মেট্রো আস্ত একটি ঘুঘুর বাসায় পরিণত হয়েছে বলে কর্মচারীদের অভিযোগ। 


    উল্লেখ্য, মেট্রো রেলের এই রিক্রিয়েশন ক্লাবের পেট্রনিং চিফ পদে রয়েছেন জেনারেল ম্যানেজার পি উদয়কুমার রেড্ডি। সংস্থার চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার তথা প্রিন্সিপাল চিফ পার্সনেল অফিসার ক্লাবের সভাপতি পদে রয়েছে। ৪ অক্টোবর ক্লাবের সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, সংস্কৃতি সম্পাদক ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে ভোটে হবে। দীর্ঘ ১১ বছর পর এই ভোট হতে চলেছে। যা আটকাতে মেট্রোর বড় কর্তারা সক্রিয় হলেও শেষে সাধারণ কর্মীদেরই জয় হল বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।   
  • Link to this news (বর্তমান)