জমা জল ও আবর্জনায় যেন নরককুণ্ড পানিহাটি, নাভিশ্বাস উঠছে শহরবাসীর
বর্তমান | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে লণ্ডভণ্ড পানিহাটি। জমা জল ও জঞ্জালে নাভিশ্বাস উঠছে শহরের বাসিন্দাদের। খোদ বিটি রোড জঞ্জাল ও জলে ভেসে গিয়েছে। নোংরা-আবর্জনা সার্ভিস রোড ছাড়িয়ে মূল রাস্তার উপর এসে পড়েছে। নাক-মুখ চেপে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন পথচারীরা। জলবন্দি এলাকার জঞ্জাল সংগ্রহ কার্যত থমকে গিয়েছে। মাসের পর মাস জমা জলে যাতায়াত করতে বাধ্য হওয়া শহরবাসী ক্ষোভে ফুসছেন। পুরসভার তরফে দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পানিহাটি শহরের নিকাশি ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে। শহরের এইচ বি টাউন ও ঘোলা এলাকার বিভিন্ন রাস্তা ছয় থেকে সাত মাস জলের তলায় থাকছে। সামান্য বর্ষা হলেই কোনও কোনও রাস্তায় হাঁটু ও কোমর সমান জল দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। বাদ থাকছে না পানিহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালও। সেখানকার বিভিন্ন ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়ে থাকছে। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির জেরে এইচ বি টাউনের বিস্তীর্ণ এলাকা, ঘোলা, ঘোলা সংলগ্ন পূর্বাঞ্চলে কিছু রাস্তার উপর হাটুর উপরে জল জমে গিয়েছে।
পুরসভার চেয়ারম্যান মলয় রায়ের ওয়ার্ডের নাটাগড় সুলেখা মোড় সহ বিভিন্ন এলাকা জলের তলায়। এছাড়া তীর্থভারতি, মানিকডাঙা, আগরপাড়া স্টেশন রোড, সোদপুর ব্রিজের নীচ থেকে কাঁচকল মোড় সহ নানান এলাকার রাস্তায় জল জমে রয়েছে। বিটি রোডের বেঙ্গল কেমিক্যাল থেকে ট্রাফিক মোড় পর্যন্ত রাস্তার বারাকপুরগামী লেনের সার্ভিস রোড কয়েক মাস ধরে জলের তলায়। সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে সেই জল বেড়ে বিটি রোডের একাংশকেও ডুবিয়ে দিয়েছে। শহরে নর্দমার জল ও বৃষ্টির জল মিশে নরককুণ্ড তৈরি হয়েছে। ওই জলে নিত্য যাতায়াত করার জন্য অনেকেই চর্মরোগে ভুগছেন।
এই জল যন্ত্রণার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আবর্জনার সমস্যা। রাজা রোডের মুখে বিটি রোডের ধারে পাহাড়ের মতো ডাই হয়ে রয়েছে আবর্জনা। তা উপচে বিটি রোডে এসে পড়েছে। একইভাবে বিটি রোডের সোদপুর ট্রাফিক মোড় লাগোয়া বিটি রোড, মধ্যমগ্রাম রোড, অমরাবতী মাঠ সহ বিভিন্ন জায়গায় আবর্জনার স্তুপ ক্রমশ বাড়ছে। জলবন্দি এলাকায় নিয়মিত আবর্জনা সংগ্রহ হচ্ছে না বলে অভিযোগ। ফলে বহু মানুষ জমা জলেই আবর্জনা ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন। ওই সব আবর্জনা ড্রেনে জমে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হচ্ছে।
শহরের বাসিন্দা সৌভিক দত্ত, কৌশিক বিশ্বাসরা বলেন, জমা জল, আবর্জনার দুর্গন্ধে মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। কিন্তু কারও কোনও হেলদোল নেই। পুরসভার চেয়ারম্যান মলয় রায় বলেন, আবর্জনা সংগ্রহ করে ধাপায় নিয়ে যাওয়ার দায়িত্বে থাকা সংস্থার কিছু সমস্যা ছিল। ওই সমস্যা মিটে গিয়েছে। এখন রোজ সাত-আটটি ডাম্পার আবর্জনা নিয়ে যাচ্ছে। দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে। বৃষ্টি কমার সঙ্গে সঙ্গে জমা জলও কমতে শুরু করেছে। আর এইচ বি টাউন নিয়ে মাস্টার প্ল্যানের বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। নিজস্ব চিত্র