গোবিন্দ রায়: রানাঘাটের ১১২ ফুটের দুর্গা প্রতিমার পুজো অনুমোদন দিলেন না জেলাশাসক। ফলে পুজোর ভবিষ্যত ঝুলে রইল কলকাতা হাই কোর্টে। সোমবার অনুমতি নিয়ে শুনানি হবে বলে আদালত সূত্রের খবর।
প্রশাসনের থেকে এই পুজোর অনুমতি না মেলায় হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল কমিটি। মঙ্গলবার বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের এজলাসে সেই মামলা ওঠে। সেই দিন বিচারপতি জেলাশাসককে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দেন। নদিয়া জেলাশাসককের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে নিরাপত্তার কারণে এই বিশাল মূর্তির পুজোর অনুমতি দেওয়া হল না।
মঙ্গলবার আদালতে পুজো কমিটি জানায়, ‘প্রতিবছর তারা পুজো করেন। সেই ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া হয় না। এবার দমকল ও বিদ্যুৎ দপ্তর অনুমতি দিলেও স্থানীয় প্রশাসন অনুমতি দেয়নি। তাঁরা জেলাশাসকের কাছে অনুমোদন চায়। তাতেও অনুমতি মেলেনি। তারা আরও জানান, ইউনেস্কো ও গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ডকে এই বিষয়টি জানানো হয়ে গিয়েছে। তাঁদের প্রতিনিধি আসবেন পুজোয়।’
সরকার তরফ থেকে বলা হয়, ‘২০১৫ সালে দেশপ্রিয় পার্কের পুজোয় একইরকম ভাবে ১০০ ফুটের বড় দুর্গা করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে পদপিষ্টের ঘটনায় সেই পুজো বন্ধ করতে বাধ্য হতে হয়। এখানেও যে জায়গায় পুজোর অনুমতি চাওয়া হয়েছে তার প্রবেশ পথ অত্যন্ত সংকীর্ণ। মাত্র ১৪ ফুটের রাস্তা রয়েছে। ফলে প্রশাসন দেশপ্রিয় পার্কের মত ঘটনার আশঙ্কা করছে।’ তার পরই আদালতে লিখিতভাবে নিরাপত্তার কথা জানিয়েই অনুমতি দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক। তবে পুজো হবে কি না তা সেই সিদ্ধান্ত সোমবার আদালতে শুনানির পরই বোঝা যাবে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুর্গা তৈরি করে চমক দিতে চেয়েছিল রানাঘাটের অভিযান সংঘ। ইউনেস্কো ও গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ডকে এই বিষয়টি জানানো হয়ে গিয়েছে বলে হাই কোর্টে জানিয়েছিল ক্লাবের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।
বৃহস্পতিবার পুজো উদ্যোক্তাদের তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও ফিরদৌস শামিম বলেন, “প্রায় ৫০ বছর ধরে ওই ক্লাব দুর্গাপুজো করছে। কোনও বছর অনুমতি নিয়ে সমস্যা হয় না। এ বছর ১১২ ফুটের দুর্গা প্রতিমা বানানো হয়েছে। যা নজির গড়তে পারে। প্রতি বারের মতো এবারও প্রশাসনের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়। কিন্তু কোনও সিদ্ধান্ত জানা যায়নি।” উদ্যোক্তাদের আইনজীবীরা আরও জানিয়েছে, ‘ওই পুজো দেখতে রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিনিধিরাও আসতে পারেন।’ সোমবার আদালত কী নির্দেশ দেয় সেই দিকেই তাকিয়ে পুজো কমিটি।