দলের সাংগঠনিক অবস্থা কেমন? আগামীদিনের কর্মসূচি কেমন হবে? এই দুই প্রশ্নে এক ঘণ্টার বেশি আলোচনা করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার ক্যামাক স্ট্রিটে তাঁদের মধ্যে এই বৈঠক হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠনের অবস্থা এখন কোথায় দাঁড়িয়ে, কোথায় ঘাটতি রয়েছে—এইসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করার ঘটনার আবহে তৃণমূল কংগ্রেসের দুই শীর্ষ নেতৃত্বের এই বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন বাংলায়। তার আগে হাতে দেড় বছর সময় রয়েছে। আবার সামনেই দুর্গোৎসব।
দলের সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনেই ক্যামাক স্ট্রিটে এই বৈঠক হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তৃণমূল কংগ্রেসে এখন দুটি বৃত্ত বিদ্যমান। এক, গোষ্ঠীকোন্দল। দুই, আদি–নব্যের দ্বন্দ্ব। এই দুটি সমস্যা কাটিয়ে উঠে সংগঠন আবার চাঙ্গা করতেই অভিষেক–সুব্রতর বৈঠক বলে জানা যাচ্ছে। এই সমস্যা দ্রুত মেটানো না গেলে সংগঠিত দল হিসাবে লড়াই করা সহজ হবে না। এটা উপলব্ধি করেই বৈঠকে বসা হয়েছিল। আগামী ২০২৫ সাল তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে রাজনৈতিক দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ওই বছরে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে সচেষ্ট থাকবেন নেতা–কর্মীরা। ১ জানুয়ারি তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবস। সেখান থেকেই বছর ভিত্তিক কর্মকাণ্ড শুরু করবে ঘাসফুল শিবির। এই সমস্ত কিছু নিয়ে বর্ষীয়ান সুব্রত বক্সি ও তরুণ নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একদফা বৈঠক হয়েছে বলেই দলীয় সূত্রে খবর।
দুর্গাপুজোর পরই কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনে মেগা বৈঠক ডাকতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন তা নিয়েও দুই নেতার মধ্যে কথা হয়েছে বলে খবর। এমনকী নতুন একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়েও দু’জনের মধ্যে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। সূত্রের খবর, সংগঠনে রদবদল নিয়েও আলোচনা হয়েছে সেখানে। তবে রদবদল নিয়ে ধীরে চলো নীতি নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তবে পৃথকভাবে সুব্রত ও অভিষেকের বৈঠক তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক আলোচনার পর্বে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। দু’জনের মধ্যে কী কথা হয়েছে, সেটা জানতে কৌতূহলী নেতারা। কিন্তু কেউ সাহস করে দু’জনকে জিজ্ঞাসা করতে পারেনি।
এছাড়া সংগঠনে রদবদল দ্রুত সেরে ফেলার বিষয়ে কথা হয়েছে। সুব্রত বক্সি ধীরে চলো নীতি নেওয়ার কথা বলেছেন। সেখানে বুথস্তর থেকে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার জন্য দ্রুত রদবদল চায় অভিষেক বলে সূত্রের খবর। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সংগঠনে আরও বেশি মাত্রায় কর্মসূচিমুখী হোন সেটা চাইছেন দলের বড় অংশের নেতা–কর্মীরা। সংগঠন বিস্তার করতে অভিষেক আরও কর্মসূচি নিতে পারেন বলেই মনে করা হচ্ছে। আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার পর এখনকার সময়ে দলের একটি বৈঠক ডাকা হতে পারে। সেখানে জনপ্রতিনিধি, নেতা–কর্মীদের আচরণ ও কর্তব্য নিয়ে সুস্পষ্ট বার্তা দেবেন বলেই খবর। যে রোড ম্যাপকে সামনে রেখেই ২০২৬ সালের ভোটযুদ্ধে যাবে তৃণমূল কংগ্রেস। আগামী ২ অক্টোবর মহালয়ার দিন দেশের বাইরে চিকিৎসা করাতে যাচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তার আগে দলের আগামী কর্মসূচির প্রস্তুতি খসড়া নিয়ে আলোচনা করলেন সুব্রত বক্সির সঙ্গে।