• ‘হুমকি সংস্কৃতিতে জড়িত’! আরজি করে তদন্ত কমিটির সামনে অভিযুক্ত অধ্যাপক এবং পড়ুয়া-চিকিৎসকেরা
    আনন্দবাজার | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ১৩ জন চিকিৎসক-অধ্যাপকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেন। শুক্রবার ওই ১৩ জন চিকিৎসকের মধ্যে কয়েক জনকে তলব করেছে হাসপাতালের তদন্ত কমিটি। শুধু চিকিৎসক নন, আরজি করে ‘হুমকি সংস্কৃতি’র সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে কয়েক জন চিকিৎসক-পড়ুয়াকেও কমিটির সামনে হাজির হওয়ার কথা বলা হয়েছে।

    সূত্রের খবর, শুক্রবার ওই ১৩ জন চিকিৎসককেই তলব করেছিল তদন্ত কমিটি। তাঁদের মধ্যে কয়েক জন হাজিরা দিয়েছেন। তবে আগে ‘হুমকি সংস্কৃতি’র সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত চিকিৎসক-পড়ুয়াদের বয়ান নথিভুক্ত করছেন কমিটির সদস্যেরা। তার পরই চিকিৎসকদের বয়ান নেওয়া হবে।

    জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগ, আরজি করে ‘হুমকি সংস্কৃতি’ চালিয়ে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতেন একাধিক চিকিৎসক। সেই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি তদন্ত শুরু করে। বুধবার আরজি করের ১৩ জন চিকিৎসকের নাম জানিয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটিকে চিঠি দিয়েছিলেন হাসপাতালের সুপার সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায়। চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন অধ্যক্ষ মানসকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

    ওই চিঠির বয়ান, ‘‘আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার এবং ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে আমরা এই ১৩ জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত কমিটি ওই অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখুক।’’ পাশাপাশি, তদন্তে উঠে আসা তথ্য রিপোর্ট আকারে দ্রুত সম্ভব কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়ার কথাও বলা হয়। চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘‘তদন্তে এই ডাক্তারদের বিরুদ্ধে পাওয়া নথিও আমাদের কাছে জমা দেবে কমিটি।’’

    আরজি করে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই হাসপাতালের ‘হুমকি সংস্কৃতি’ নিয়েও একাধিক অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, বেশ কয়েক জন চিকিৎসক এবং অন্য আধিকারিকেরা হাসপাতালে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছেন। জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই ৫০-এর বেশি জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে চিকিৎসক ছাড়াও রয়েছেন হাউসস্টাফ, ইন্টার্নেরা। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জনকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে হাসপাতালের তদন্ত কমিটি।

    বুধবার এই জিজ্ঞাসাবাদ পর্বের সময় হাসপাতালে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। অভিযুক্তেরা হাসপাতালে ঢুকতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁরা হাসপাতালের মধ্যেই বিক্ষোভ দেখান। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ওই চিকিৎসক-পড়ুয়ারা যখন হাসপাতালের প্ল্যাটিনাম জুবিলি ভবন থেকে ছ’নম্বর গেট দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন, তখন তাঁদের পিছনে ধাওয়া করেন বিক্ষোভকারীরা। সঙ্গে চলে লাগাতার স্লোগান। ‘চোর চোর’ স্লোগানও ওঠে অভিযুক্তদের উদ্দেশে।

    সেই আবহেই বুধবারই ১৩ জন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। তাঁদের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ, তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট না করলেও জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি, ওই চিকিৎসকেরা ‘হুমকি সংস্কৃতি’র সঙ্গে যুক্ত। উল্লেখ্য, যে ১৩ জন চিকিৎসকের নাম তদন্ত কমিটিকে দেওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যে এক জন হাসপাতালের নির্যাতিতার ময়নাতদন্ত করেছিলেন। তাঁকে ইতিমধ্যে একাধিক বার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে সিবিআই। এ ছাড়া, আরজি করে আর্থিক দুর্নীতি মামলায় সিবিআই বাড়িতে হানা দিয়েছিল, এমন এক চিকিৎসকও রয়েছেন এই তালিকায়।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)