‘দেখুন কেমন লাগে’! ভাঙা রাস্তার জলকাদায় নেতাদের হাঁটালেন গ্রামবাসীরা, পথের দাবি মেনে শুরু হল কাজ
আনন্দবাজার | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
বার বার আবেদনে যে কাজ হয়নি, তা হল এক দিনের বিক্ষোভেই। পূর্ব বর্ধমানের মেমারি থানায় গ্রামবাসীদের অবরোধ এবং বিক্ষোভে টনক নড়ল প্রশাসনের। জলকাদা ভর্তি রাস্তা দিয়ে স্থানীয় নেতা, জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনের ব্যক্তিদের হাঁটানোর পর দিনই শুরু হয়ে গেল রাস্তার সংস্কার। গ্রামবাসীরা বলছেন, ‘অবশেষে কাজ হল।’ প্রশাসন মেনে নিচ্ছে, এলাকাবাসীর দাবি ন্যায্যই ছিল।
বৃহস্পতিবার রাস্তা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন গ্রামবাসীরা। দীর্ঘ ক্ষণ রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় ঘটনাস্থলে যান প্রশাসনের লোকজন। তখন ভাঙা রাস্তার কাদাজলে পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি এবং পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষকে এক প্রকার হাঁটতে বাধ্য করেন গ্রামবাসীরা। এমনকি, ‘রাস্তা ঠিক করা হবে’ বলে একটি প্রতিশ্রুতিপত্রও লিখিয়ে নেওয়া হয়। তাতেই হল কাজ হল। পথের দাবি মেনে শুক্রবার সকালে ইট ফেলে রাস্তা সারাই শুরু করল প্রশাসন।
বর্ধমান-২ ব্লকের মেমারি থানার নবস্থা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বেগুট গ্রামের রাস্তা দীর্ঘ দিন ধরেই খারাপ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বার বার তাঁরা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। পঞ্চায়েত থেকে বিডিও সবাইকে জানিয়েছিলেন। কোনও পদক্ষেপ করেননি কেউ-ই। বৃহস্পতিবার ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা রাস্তা সংস্কারের দাবি তুলে পঞ্চায়েত অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেন। রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে বর্ধমান- কালনা রোড অবরোধ করেন তাঁরা। দীর্ঘ ক্ষণ অবরোধ চলার পর মেমারি থানার পুলিশ এবং বর্ধমান-২ ব্লকের জয়েন্ট বিডিও শিল্পা ভকত বিক্ষোভস্থলে যান। কিন্তু তাঁরাও স্থানীয়দের ক্ষোভের মুখে পড়েন।
শুক্রবার সকাল থেকে দেখা গেল ইট ফেলে রাস্তায় গর্ত বোজানোর কাজ শুরু হয়েছে। যা দেখে স্বাভাবিক ভাবে খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, বিক্ষোভের জেরেই টনক নড়েছে প্রশাসনের। গ্রামের বাসিন্দা তুহিন হাটি, সজল দত্ত, কল্যাণ হাজরারা বলেন, ‘‘আমরা পঞ্চায়েত থেকে বিডিও, সর্বত্র রাস্তা সারাইয়ের জন্য দরবার করেছি। কিন্তু শুকনো প্রতিশ্রুতি ছাড়া আর কিছুই মেলেনি। ‘হচ্ছে’, ‘হবে’ বলে এড়িয়ে গিয়েছেন সবাই। এ বার কাজ হল।’’
বর্ধমান-২ গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ পরেশ কাহার মানছেন গ্রামবাসীরা যুক্তিসঙ্গত দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের দাবি বা ক্ষোভ হওয়া স্বাভাবিক। রাস্তার কাজ শুরু হচ্ছে। আসলে ফান্ডের জন্য সব রাস্তার কাজই আটকে ছিল।’’ আর এ নিয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার বলেন, ‘‘সংস্কারের প্রয়োজন এমন সব রাস্তারই কাজ শুরু হবে। বৃষ্টির জন্য কাজ আটকে ছিল।’’