সংবাদদাতা, শান্তিনিকেতন: আর্থিক অবস্থা মোটেই ভালো নয়। তাই এবার পুজোয় গ্রামবাসীদের পাত পেড়ে খাওয়াতে পারবেন না বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর পৈতৃক বাড়ি নানুরের হাটসেরান্দিতে প্রতিবছর জাঁকজমক করে দুর্গাপুজো হয়। দু’ বছর বাদে গোরুপাচার মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়ে সেই পুজোর প্রস্তুতি দেখতে এসেছিলেন মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে। তাঁদের প্রিয় কেষ্টকে দেখতে গ্রামবাসীরাও ভিড় জমান। সেখানেই কথা প্রসঙ্গে অনুব্রত বলেন, আর্থিক সঙ্গতি আর আগের মতো নেই। তাই এবার আর গ্রামবাসীদের পুজোর ক’দিন পাত পেড়ে খাওয়াতে পারব না। তবে তাঁদের সঙ্গেই তিনি পুজো কাটাবেন।
অনুব্রত গত মঙ্গলবার গোরুপাচার ও আর্থিক দুর্নীতি মামলায় জামিনে মুক্ত হয়ে বোলপুরে ফিরে এসেছেন। গ্রেপ্তারির আগে প্রতিবছর নানুরের হাটসেরান্দি গ্রামে তাঁর বাড়ির দুর্গাপুজোয় জাঁকজমকে খামতি রাখতেন না। পুজোর চারদিন গ্রামবাসীদের জন্য ভোজের আয়োজন থাকত। পুজোর দিনগুলিতে তাঁর বাড়িতে ভিড় লেগে থাকত রাজনৈতিক নেতাদের। ২০২২ সালের আগস্ট মাসে কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে গ্রেপ্তার হন তিনি। তার কয়েক মাস পরে একই মামলায় গ্রেপ্তার হন তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল। তারপরে কেটে গিয়েছে দু’টি বছর। এই বছর দু’জনই জেল থেকে মুক্ত। শুক্রবার মেয়েকে সঙ্গে নিয়েই গ্রামের বাড়ির পুজোর প্রস্তুতি দেখতে এসেছিলেন তিনি। প্রথমেই দুর্গামণ্ডপে গিয়ে সমস্ত কিছু তদারকির পাশাপাশি কাজকর্ম দেখেন। তারপর বাড়িতে পৌঁছে নিজের মায়ের ছবিতে প্রণাম করে স্থানীয়দের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ গল্প করেন।
অনুব্রত বলেন, এটা আমার পৈতৃক বাড়ি। আমার দাদু, বাবা এখানে জন্মগ্রহণ করেছে, বড় হয়েছে। তাই বাড়ির পুজোর প্রস্তুতি দেখতে এলাম। সপ্তমীর দিন আসব। তবে এই বছর আর গ্রামবাসীদের খাওয়াতে পারব না। কারণ আমার আর্থিক অবস্থা সেরকম নেই। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কী কথা হল জানতে চাওয়ায় তিনি বলেন, আমার গ্রামে গরিব মানুষ বেশি। তাঁদের নিয়েই পুজো কাটাব। রক্তের সম্পর্কের মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে চাই না।
গ্রামের বাসিন্দা রাধারানি থান্ডার, নীরদ বাগদি, রূপা বাগদিরা বলেন, আমাদের কেষ্টদা ফিরে এসেছে, খুব ভালো লাগছে। সঙ্গে সুকন্যাও ফিরেছে। এই দু’ বছর পুজো হলেও আনন্দ ছিল না বললেই চলে। এবার ওঁরা ফিরে আসায় আবার আগের মতো জাঁকজমক করে পুজো হবে।