• রসিদ ছাড়াই সব্জি বিক্রি পাইকারি বাজার থেকে, ক্রয় ও বিক্রয়মূল্যের বিস্তর ফারাক
    বর্তমান | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: পুজোর সময়ে লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি রোধ করে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে মরিয়া প্রশাসন। একের পর এক বাজারে অভিযান চালাচ্ছেন প্রশাসনিক আমলারা। শুক্রবারও আসানসোল বাজারে অভিযানের নেতৃত্ব দিলেন আসানসোলের মহকুমা শাসক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য। পাইকারি ও খুচরো ব্যবসায়ীরা যে দামে কারচুপি করছে, এদিন নানা ঘটনা থেকে তা স্পষ্ট। ঋষভ সাউ নামে আসানসোলের বাজারের এক বড় পাইকারি ব্যবসায়ী প্রশাসনিক কর্তাদের সামনে কোনও প্রয়োজনীয় নথি দেখাতে পারেননি। তাঁর দোকান সিল করার নির্দেশ দেন মহকুমা শাসক। বেশিরভাগ পাইকারি দোকানেই সামগ্রী বিক্রির রসিদ নেই। ক্রয়মূল্য ও বিক্রয়মূল্যের মধ্যে বিস্তর ফারাক ধরা পড়ছে। অনেকে তো বাজারে অভিযানের কথা শুনে দোকান বন্ধ করে বেপাত্তা হয়ে যান। সেইসব দোকান খুলিয়ে অভিযান চালানো হয়।


    আসানসোলের বিভিন্ন বাজারে বাঁধাকপি ৫০ টাকা কিলো, টম্যাটো ৮০ টাকা কিলো, কুমড়ো ৩০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা কিলোয় বিক্রি হচ্ছে।  আলু ৩২ টাকা কিলো, পেঁয়াজ ৬০ টাকা কিলো। জেলা, মহকুমা প্রশাসন, রেগুলেটরি মার্কেট কমিটি, লিগ্যাল মেট্রোলজি, পুলিসের এনফোর্সমেন্ট টিম বার বার মার্কেট পরিদর্শন করলেও খুচরো বাজারে দামের যে বিস্তর ফারাক তা স্পষ্ট হয়েছে আসানসোল বাজারে প্রশাসনিক অভিযানে। পাইকারি কারবারেও এদিন বিস্তর অনিয়ম ধরা পড়েছে। দেখা যাচ্ছে, পাইকারি দোকানদাররা খুচরো বিক্রেতাদের রসিদ দিচ্ছেন না। তাই পাইকারি বাজার থেকে ঠিক কত টাকায় বিভিন্ন সামগ্রী খুচরো বিক্রেতারা কিনছেন তার কোনও হিসেব থাকছে না। এতে দুই পক্ষেরই লাভ। পাকা বিল দিতে না হওয়ায় প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার কারবার করলেও সরকারকে ট্যাক্স দিতে হচ্ছে না পাইকারি ব্যবসায়ীদের। অন্যদিকে খুচরো বিক্রেতারা কত টাকায় জিনিস কিনছেন তার প্রমাণ না থাকায় সাধারণ মানুষের কাছে যেমন খুশি দাম চাইছেন অসাধু খুচরো বিক্রেতারা। এদিন মহকুমা শাসক হুঁশিয়ারির সুরে পাইকারি ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেন। তিনি বলেন, আড়াই মাস ধরে বাজারে ঘুরছি। আপনাদের বার বার বলছি নির্দিষ্ট রসিদের মাধ্যমে জিনিস বিক্রি করুন। সঠিক রসিদের মাধ্যমে বিনিময় না হলে দোকান বন্ধ করে দেওয়া হবে। কোনও পাইকারি দোকানদার রসুনের ২০০ টাকা কেজি বলছেন, কেউ বলছেন ২৮০ টাকা কেজি। একই ভাবে আলু, পেঁয়াজেরও দামের বিস্তর ফারাক ধরা পড়ছে। এক বড় অসাধু চক্রের জেরেই সাধারণ মানুষ বেশি দামে সব্জি কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। অন্যদিকে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী দু’হাতে টাকা লুটছে। জেলা রেগুলেটরি মার্কেট কমিটির সম্পাদক দিলীপ মণ্ডল একাধিক ব্যবসায়ীকে নথি নিয়ে আরএমসি অফিসে দেখা করার নির্দেশ দিয়েছেন।
  • Link to this news (বর্তমান)