• ঝোড়ো হাওয়ায় গঙ্গায় ডিঙি উল্টে নিখোঁজ মত্স্যজীবী
    বর্তমান | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ ও সংবাদদাতা, মানিকচক: জেলাবাসীর চিন্তা বাড়াচ্ছে গঙ্গা, ফুলহার, মহানন্দা। এখনও বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে গঙ্গা। ফুলহারের জলস্তর বিপদসীমা ছুঁইছুঁই। পিছিয়ে নেই মহানন্দা নদীও। ক্রমশ জল বাড়ছে তারও। এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গঙ্গায় মাছ ধরতে নেমে মানিকচকে নিখোঁজ হয়ে গেলেন এক মৎসজীবী। তাঁর নাম উদয় চৌধুরী (৪১)। গত তিনদিন ধরে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলছিলই। সেই সঙ্গে ছিল ঝোড়ো হাওয়া। আবহাওয়া প্রতিকূল থাকা সত্ত্বেও উদয় ডিঙি নিয়ে মানিকচক ঘাট দিয়ে গঙ্গায় মাছ ধরতে নামেন। ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে গঙ্গার উত্তাল ঢেউয়ে ডিঙি উল্টে যায় উদয়ের। ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ তিনি। প্রশাসনের তরফে শুক্রবার দিনভর তল্লাশি চালিয়েও তাঁকে উদ্ধার করা যায়নি। জেলা প্রশাসন, গ্রামবাসীদের ডিঙি ব্যবহারে বারণ করেছে। কয়েকদিনের লাগাতার বৃষ্টিতে নদীগুলির জল বাড়ায় ডিঙি নৌকা ব্যবহার বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। দুর্গতদের ত্রাণ শিবিরে চলে আসার জন্য অনুরোধ করেছে জেলা প্রশাসন। 


    পরিস্থিতি মোকাবিলায় দুয়ারে রেশন ও দুয়ারে ত্রাণ বিলি করেছে জেলা প্রশাসন। মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া বলেন, ১৫ হাজার ত্রিপল, শাড়ি ধুতি, লুঙ্গি, বাচ্চাদের ৬ হাজার সেট জামা কাপড়, ৫ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট, স্টোভ, বাসন, কেরোসিন সহ প্রায় ৩ হাজার বিপর্যয় মোকাবিলা কিট মজুত রাখা হয়েছে। ত্রাণ বণ্টনের জন্য গ্রাম ভিত্তিক ১৭ টি দলকে নামানো হয়েছে। 


    এদিকে, পুলিসের উপস্থিতিতে ভূতনিতে বাঁশ পাইলিং করে বালির বস্তা দিয়ে রিং বাঁধ তৈরির কাজ চলছে। এদিন নৌকা নিয়েই ভূতনির বিধ্বস্ত এলাকায় দুয়ারে সরকার কর্মসূচির মাধ্যমে রেশন বিলি করা হয়। মানিকচকের ত্রাণ শিবির গুলিতে আশ্রয় নেওয়া বাচ্চাদের পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এদিন তাদের বই বিতরণ করে বাচ্চাদের পঠনপাঠন শুরু করিয়েছেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। 


    শুক্রবার বেলা বারোটায় মানিকচক ঘাটে গঙ্গার জলস্তর ছিল ২৫.২০ মিটার। যা বিপদসীমা থেকে ৫১ সেন্টিমিটার বেশি। এদিন ফুলহার নদীর জলস্তর ছিল ২৭. ২২ মিটার। ফুলহারের বিপদসীমা ২৭. ৪৩ মিটার। আর মাত্র ২১ সেন্টিমিটার জল বাড়লেই ফুলহারও বিপদসীমা ছুঁয়ে যাবে। মহানন্দায় জলস্তর বেড়ে হয়েছে ১৯.৬২ মিটার। মহানন্দার বিপদসীমা ২১.০০ মিটার।  এদিন নৌকা করে ভূতনির বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম ও শ্রমিক সংগঠনের নেতা ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন দলের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সি, জেলা পরিষদের সভাধিপতি লিপিকা ঘোষ বর্মন, মানিকচকের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)