এই সময়: ঘোষণা আগেই হয়েছিল। সরকারি মেডিক্যাল কলেজ এবং বড় হাসপাতালগুলিতে রাতের ডিউটিতে থাকা কর্মীদের (বিশেষ করে মহিলা) নিরাপত্তায় শুক্রবার থেকে চালু হয়ে গেল ‘রাত্তিরের সাথী— হেল্পার অ্যাট নাইট’ প্রকল্প। প্রথম পর্বে কলকাতা পুলিশ এলাকার মধ্যে চারটি মেডিক্যাল কলেজ-সহ ছ’টি হাসপাতালের রাতের নিরাপত্তা দেখার জন্য ছ’জন প্রাক্তন পুলিশ অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা শুধু নাইট ডিউটিতে থাকা কর্মীদের নিরাপত্তা দেখভাল করবেন। তার জন্য পুলিশ এবং নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন থেকে নজরদারির প্রক্রিয়া স্থির করবেন ওই নিরাপত্তা অফিসার।আরজি করে চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনের ১০ দিন পরেই কর্মস্থলে মহিলাদের নিরাপত্তায় জোর দিতে ১৭ দফা পদক্ষেপের ঘোষণা করা হয়েছিল নবান্নের তরফে। সেই তালিকারই অন্যতম, এই হেল্পার অ্যাট নাইট। কলকাতা পুলিশ এলাকার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, এসএসকেএম হাসপাতাল, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ, এমআর বাঙুর হাসপাতাল, মেটিয়াবুরুজ (গার্ডেনরিচ এসজিএইচ) ও কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ আপাতত এর আওতায় থাকছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের জারি করা নির্দেশে বলা হয়েছে, কলকাতার পুলিশ কমিশনারের সুপারিশের ভিত্তিতেই ছ’জন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসারকে ‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্পে নিয়োগ করা হবে। অগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে শীর্ষ আদালতে আরজি কর মামলার শুনানিতে স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্তদের নিরাপত্তায় টাস্ক ফোর্স গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের ডিভিশন বেঞ্চ।
এর পরেই সমস্ত সরকারি মেডিক্যাল কলেজ, জেলা হাসপাতাল এবং সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ, সেনা অফিসার, নৌবাহিনী, বায়ুসেনার অফিসার মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এই মর্মে একটি নির্দেশিকাও জারি করেছিলেন রাজ্য পুলিশের তৎকালীন এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) মনোজ বর্মা। ঘটনাচক্রে, তিনিই এখন কলকাতার পুলিশ কমিশনার।
গত দু’বছরের মধ্যে অবসর নেওয়া পুলিশ ইনস্পেক্টর থেকে এসপি— যাঁরা এখনও কর্মদক্ষ রয়েছেন এবং হাসপাতালগুলির নিরাপত্তার তদারকি করতে ইচ্ছুক, তাঁদেরই নিরাপত্তা অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। এঁরা সকলেই কলকাতা পুলিশের ডেপুটি বা অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদে কর্মরত ছিলেন। আদালতের নির্দেশে বর্তমানে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের দায়িত্বে রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
এ ছাড়াও ২০১৯-এ এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক জুনিয়র ডাক্তারের প্রহৃত হওয়ার পরে প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজে এক জন এসি পদমর্যাদার অফিসার দায়িত্বে থাকেন। এই এসিরা হাসপাতালের আইন-শৃঙ্খলা দেখবেন। নিরাপত্তা অফিসারেরা শুধু রাতের ডিউটিতে থাকা কর্মীদের নিরাপত্তা দেখবেন। তাঁদের কাছে হাসপাতালের সম্পূর্ণ মানচিত্র থেকে শুরু করে সব তথ্য থাকবে।