মালদার মানিকচকের ভূতনি, গোপালপুর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় এখনও বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ। গত দু’দিনে বন্যার জলে তলিয়ে তিনজনের নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। ত্রাণ বন্টন নিয়েও অভিযোগ এই এলাকায়। আজ, শনিবার সেখানকার বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে যান রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ফিরহাদকে ফোন করে এলাকার বন্যা কবলিত বাসিন্দাদের বিশেষ বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।অন্যদিকে, ফিরহাদ এলাকা ছাড়তেই কিছু লোকজন ত্রাণ লুট হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। যাঁরা ত্রাণ বিলির দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা পরিস্থিতি সামালানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। অভিযোগ, ত্রাণ সামগ্রী ভর্তি লরিতে উঠে ত্রাণের জিনিস নিয়ে পালিয়ে যান স্থানীয় অনেকেই।
মালদার মানিকচক ব্লকের গোপালপুর অঞ্চলে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন ফিরহাদ। তিনি ফোনে বন্যা পরিস্থিতির সর্বশেষ খবর জানান মুখ্যমন্ত্রীকে। ফোনের লাউড স্পিকার চালু করে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা বন্যা দুর্গতদের শোনান ফিরহাদ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানিকচকের ভূতনি ও গোপালপুরের বন্যা কবলিতদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। পাশাপাশি জেলাশাসককে বেশ কিছু বিষয়ে নির্দেশও দেন বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নদীর বাঁধ কেটে দেওয়ার পরে জলটা অনেকটাই বেড়েছে। জল এতটাই বেড়ে গিয়েছে, তাই আমি আপনাদের বলব এখন নৌকায় পারাপার করবেন না। গবাদি পশু আটকে গেলে সরকার আপনাদের গবাদি পশু দিয়ে দিবে। তবে নিজের প্রাণটা বাঁচান। আপনারা নিশ্চিত থাকুন ভূতনির চক, মানিকচকে যা যা কাজ করার আমাদের সরকার করে দেবে।’ তিনি আরও জানান, রাজ্য সরকারের অনেক আধিকারিক ভূতনি, মানিকচক ঘুরে এসেছেন। রাজ্য সরকারের মন্ত্রীরা, জনপ্রতিনিধিরাও গিয়েছেন।
মালদার জেলাশাসকের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী জানান, পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ মানুষকে দিয়ে দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানি ভূতনির চরের মানুষের কষ্ট হচ্ছে। ওই জায়গা প্রতি বছরই বন্যায় প্লাবিত হয়। বন্যায় এখনও পর্যন্ত যাঁরা মারা গিয়েছেন তাঁদের পরিবারকে সরকার দু’লক্ষ টাকা করে সাহায্য করবে। বর্ষা শেষ হলে ভূতনির মানিকচকের বাঁধের মেরামতির কাজ শুরু হবে।’
রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম শনিবার দুপুরে মানিকচকের গোপালপুর হাই স্কুলে বন্যা কবলিতদের হাতে ত্রাণ তুলে দেন। মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া, জেলা পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব, মানিকচক বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র, রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী ও হরিশ্চন্দ্রপুর-এর বিধায়ক তাজমুল হোসেন- সহ জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা।