ভেজালেও সেই ঝাঁজ! নামী কোম্পানির টিন নিয়ে সর্ষেতেলের ১০ বছরের ব্যবসা, রানাঘাটে গ্রেফতার ব্যবসায়ী
আনন্দবাজার | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ভেজাল সর্ষের তেলের কারখানার হদিস নদিয়ার রানাঘাটে। গ্রেফতার হলেন তেল ব্যবসায়ী। পাম তেল এবং নিষিদ্ধ রাসায়নিক মিশিয়ে তৈরি হত ভেজাল সর্ষের তেল, এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ সূত্র মাফিক এই খবর পেয়ে কারখানায় শুক্রবার অভিযান চালিয়ে ২৫ টিন ভেজাল সর্ষের তেল, ৯০ টিন রাইস বার্ন অয়েল, বেশ কিছু তেল তৈরির সামগ্রী এবং ২০০ মিলিলিটার নিষিদ্ধ রাসায়নিক উদ্ধার হয়েছে। শনিবার ধৃত ব্যবসায়ীকে আদালতে হাজির করানো হবে।
তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, ট্যাঙ্কারে করে পাম তেল আনা হত। তার পর বাইরে থেকে কিনে মজুত করা হত নামী কোম্পানির তেলের টিন। ‘ব্র্যান্ডেড’ টিনে অর্ধেক পাম তেল ভরে মেশানো হত খোলা বাজারে বিক্রি হওয়া নিম্ন মানের সর্ষের তেল। কিন্তু, ভেজাল হলে তো আর ঝাঁজ থাকবে না। তাই ঝাঁজ আনতে মেশানো হত রাসায়নিক। টিনের মুখ সিল করে এমন ভাবে সেগুলো বাজারজাত করা হত যে, তেলের গুণমান নিয়ে কোনও প্রশ্নই উঠত না। এ ভাবে প্রায় ১০ বছর ধরে ভেজাল তেলের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন স্বপন ঘোষ নামে এক ব্যবসায়ী।
এক তদন্তকারী বলেন, ‘‘খোলা বাজারে এক লিটার পাম তেলের দাম ৯০ টাকা। আর এক লিটার সর্ষের তেলের দাম ১৭০ টাকা। এখানে এক লিটার ভেজাল তেলের মধ্যে হাফ লিটার পাম তেল ঢালা হত। যার দাম ৪৫ টাকা। বাকি হাফ লিটার থাকত সর্ষের তেল ও রাসায়নিক। এর জন্য মোটের উপর খরচ পড়ে ১৩০ টাকা। অর্থাৎ, এক লিটার ভেজাল সর্ষের তেলে কম করে ৪০ টাকা লাভ হত। ধৃত ব্যবসায়ী নিজের একটি ভুয়ো সংস্থাও তৈরি করেছিলেন।’’ জানা যাচ্ছে, সেই ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে তেলের টিনগুলি সিল করা হত। ভেজাল কারবারের নেপথ্যে আর কে কে জড়িত, খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। রানাঘাট পুলিশ জেলার (ডিএসপি-ডিইবি) লক্ষ্মীনারায়ণ দে বলেন, ‘‘গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আমরা তেল কারখানায় হানা দিয়েছিলাম। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। প্রচুর পরিমাণ তেল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার জন্য আমরা ইতিমধ্যে ল্যাবরেটরিতে পাঠিয়েছি। মালিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি তদন্ত চলবে।’’