উপযুক্ত নিকাশি ব্যবস্থার অভাবে একটু ভারী বৃষ্টিতেই জলভাসি হয়। সঙ্গে জুড়েছে মেট্রোর কাজের জন্য তৈরি হওয়া রাস্তার বড় বড় গর্ত। সব মিলিয়ে ভিআইপি রোডের উপরে হলদিরাম থেকে কৈখালি পর্যন্ত অংশের বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রীরা দু’দিনের বৃষ্টিতেই আবার চরম ভোগান্তির শিকার হলেন।
নিম্নচাপের কারণে বৃহস্পতি ও শুক্রবারের বৃষ্টিতে হলদিরাম থেকে কৈখালি পর্যন্ত রাস্তার দু’দিকের সার্ভিস রোড এক প্রকার নদীতে পরিণত হয়েছে। রাস্তা দিয়ে গাড়ি গেলেই ঢেউ উঠছে। দু’টি সার্ভিস রোডই জলে ডুবে যাওয়ায় বিমানবন্দরমুখী রাস্তায় তীব্র যানজট তৈরি হচ্ছে। ক্ষুব্ধ নাগরিকদের অভিযোগ, প্রতি বছরই বৃষ্টি হলে এই ভোগান্তি তাঁদের লেগে থাকে। জল জমার সমস্যা তো মেটেইনি, উল্টে মেট্রোর কাজের জন্য হলদিরাম থেকে কৈখালি পর্যন্ত রাস্তায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
শুক্রবার সকাল থেকে বৃষ্টি কমে মাঝেমধ্যে রোদও উঠেছে। তা সত্ত্বেও হাঁটুজল ঠেলে বাড়ি ফিরতে হয়েছে লোকজনকে। জমা জলে গাড়ি বিকল হতে দেখা গিয়েছে। ওই এলাকার আবাসন, দোকান, বেসরকারি হাসপাতাল কিংবা কিন্ডারগার্টেন স্কুলও জলবন্দি হয়ে থেকেছে। আবাসনের বাসিন্দাদের অভিযোগ, জলের জন্য সার্ভিস রোডে ঢুকতে না পেরে মূল ভিআইপি রোড থেকেই পড়ুয়াদের তুলছে স্কুলবাস। এক অভিভাবকের অভিযোগ, ‘‘জল ভেঙে বাসে উঠতে গিয়ে ছেলে পড়ে যাওয়ায় স্কুলেই যেতে পারেনি। চার দিকে এত জমা জল যে, অ্যাম্বুল্যান্সও ঢুকতে পারবে না।’’
এ সবের মধ্যে দুর্ভোগ বাড়িয়েছে বিমানবন্দর-নিউ গড়িয়া মেট্রোর অসমাপ্ত কাজ। হলদিরাম থেকে কৈখালির দিকে সার্ভিস রোড ধরে স্টেশন নির্মাণের কাজ চলছে। স্থানীয়দের দাবি, মেট্রোর স্তম্ভ বসাতে বড় বড় গর্ত করা হয়েছে। জমা জলের নীচে সেই সব গর্ত কোথায় আছে, বিদ্যুতের তার কোথাও পড়ে আছে কিনা, কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। তাঁদের অভিযোগ, স্তম্ভ বসানোর কাজ শেষ হওয়ার পরেও রাস্তায় পড়ে থাকা নির্মাণ সামগ্রী সরানো হয়নি। মেট্রোর তরফে স্টেশন তৈরির কাজ শুরুর আগে বিরাট নিকাশি নালা তৈরি করা হলেও এই বর্ষায় তা কোনও কাজেই আসেনি।
মেট্রোর তরফে জানানো হয়েছে, ভিআইপি রোডে সার্বিক ভাবে নিকাশির সমস্যা থাকায় নির্মাণস্থল থেকে জমা জল সরতে সময় লাগছে। যে নকশা অনুযায়ী স্তম্ভ বসার কথা, তা এখনও সম্পূর্ণ না হওয়ায় নালাটি খোলা সম্ভব হয়নি। রেলওয়ে বিকাশ নিগম লিমিটেডের (আরভিএনএল) এক আধিকারিক জানান, সার্ভিস রোডে কিছু সমস্যা রয়েছে। চেষ্টা চলছে কাজ শেষ হওয়া অংশের মূল রাস্তা খুলে দিতে।
অন্য দিকে, বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ (নিকাশি) দেবরাজ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, নিকাশি উন্নত করার কাজ পূর্ত দফতর করে। পুরসভার সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে।