• অবশেষে কেষ্ট-কাজল সৌজন্য সাক্ষাৎ বোলপুরের পার্টি অফিসে
    প্রতিদিন | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • দেব গোস্বামী, বোলপুর: গরু পাচার মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়ে গত চলতি সপ্তাহেই বীরভূমে, নিজের গড়ে ফিরেছেন অনুব্রত মণ্ডল। মাঝে কেটে গিয়েছে চার চারটি দিন। অনুগামীরা তো বটেই, দলের বহু কর্মী-সমর্থক ইতিমধ্যে দেখা করেছেন প্রিয় ‘কেষ্টদা’র সঙ্গে। এখনও দেখা করে উঠতে পারেননি কেউ কেউ। তবে সেই তালিকায় একটি নাম নিয়ে শুরু হয়েছিল ফিসফাস, গুঞ্জন। তিনি হলেন বীরভূমের জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ। প্রকাশ্যে বার বার ‘রাজনৈতিক গুরু’ দলের জেলা সভাপতির গুণগান করলেও গত চারদিনে একবারও দেখা করতে যাননি ‘শিষ্য’। এমনকী কেষ্ট ফোন করার পরও যাওয়া হয়নি তাঁর। কারণ নিয়ে হাজার সমালোচনার মাঝে সমস্ত জল্পনা উড়িয়ে শনিবার বোলপুরে গেলেন কাজল শেখ। দলীয় কার্যালয়ে মুখোমুখি দেখা হল দুজনের, ২ বছর পর। বৃহস্পতিবার দলীয় দপ্তরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অনুব্রত সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে চলার বার্তা দিয়েছিলেন। তার পর শনিবার সন্ধেবেলাই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে কাজল শেখ কার্যত সেই বার্তাকেই গ্রহণ করলেন। 

    আসলে, বদলের বীরভূমে কেষ্ট-কাজলের সাক্ষাতের ভিন্নতর গুরুত্ব রয়েছে। ২ বছর তিহাড় জেল থেকে ছাড়া পেয়ে জেলায় এলেও এতদিন কাজল শেখের সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডলের দেখা হয়নি। বুধবার দলীয় দপ্তরে এসে অনুব্রতবাবু নিজে ফোন করে কাজল শেখকে আসার আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু নানুরে দলীয় কর্মসূচি থাকায় তিনি দেখা করতে পারেননি। তা নিয়ে কাজলের বক্তব্য ছিল, ‘‘কেষ্টদার সঙ্গে দেখা করতে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে যেতে হয় না। সময় পেলেই দাদার সঙ্গে দেখা করে আসব। পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির জন্যই সামনে যেতে পারছি না। তবে দিল্লি থেকে, বোলপুর থেকে বহুবার গুরুর সঙ্গে কথা হয়েছে।’’

    এর পর শনিবার সন্ধ্যায় অবশেষে বোলপুরের তৃণমূল কার্যালয়ে গেলেন কাজল শেখ, অনুব্রতর সঙ্গে দেখা করেন। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে কথা হয় দুজনের। বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কাজল শেখ জানান, ”এটা সৌজন্য সাক্ষাৎ। দাদা পার্টি অফিসে বসছেন। সবাই এসে দেখা করছেন। আমিও আজ দেখা করলাম।” রাজনৈতিক আলোচনা হয়েছে? এর জবাবে কাজলের স্পষ্ট জবাব, ”এখন  রাজনৈতিক আলোচনার সময় নয়। আগে দাদা সুস্থ হয়ে উঠুন। ওঁর শরীর ভালো না। কলকাতায় যাবেন চিকিৎসা করাতে। সেসব হোক। তার পর রাজনীতি, সংগঠন সব নিয়ে কথা হবে।” অনুব্রতকে মিথ্যা মামলায় ২ বছর ধরে জেলবন্দি করে রাখা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি। অভিভাবক বরাবর অভিভাবকের জায়গাতেই থাকবেন, তাও বলেন কাজল শেখ।

    ২০২৬ সালে বিধানসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যে অনুব্রত-হীন বীরভূমে নির্বাচনে তৃণমূূলের ফলাফল ভালোই হয়েছে। এবার জেলা সভাপতি নিজে ফিরেছেন ফের সংগঠনের হাল ধরতে। আর তার জন্য প্রথমেই তিনি দ্বন্দ্ব-কাঁটা উপড়ে ফেলার পথে হেঁটেছেন। কাজল-বিরোধী কেরিম খানকে সঙ্গে নিয়ে থাকলেও অনুব্রত বুঝিয়েছেন, সকলকে জোটবদ্ধ করাই তাঁর মূল লক্ষ্য। আর এই বার্তার পরই ক্ষোভ ভুলে শনিবার কাজল শেখ গেলেন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে। 
  • Link to this news (প্রতিদিন)