অরূপ বসাক, মালবাজার: একের পর এক দুর্ঘটনা লেগেই আছে মালবাজার মহকুমার মেটেলিতে। শুক্রবার রাতে মেটেলি বাজারে মর্মান্তিক এক পথ দুর্ঘটনায় এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়। নাম নির্মলেন্দু পাইন। গত সপ্তাহেই এই একইভাবে বাইকের ধাক্কায় এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনার মর্মান্তিক পরিণতিতে এবার ক্ষুব্ধ মেটেলির বাসিন্দারা। যার জেরে শনিবার চালসা-মেটেলির রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন শয়ে শয়ে স্থানীয় মানুষ।
মেটেলি বাজারের ব্যবসায়ী কমিটিও ততোধিক ক্ষুব্ধ। এদিন সকাল থেকেই দফায় দফায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এলাকার মানুষজন। প্রথমে মিছিল করে স্থানীয় থানার বাইরে বিক্ষোভ প্রদর্শনের পর তাঁরা মেটেলির ইংডং মোড় এলাকায় রাজ্য সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান। স্থানীয়দের অভিযোগ, একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে, অথচ নির্বিকার পুলিশ প্রশাসন। রাজ্য সড়কে প্রতিদিন বাইকের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে। আর সেই বেপরোয়া গতি প্রাণ কাড়ছে পথচলতিদের।
জানা গিয়েছে, মৃত নির্মলেন্দু পাইন পুজোর মিটিং করতে যাচ্ছিলেন মেটেলি কালীমন্দিরে। যাওয়ার পথেই এক বেপরোয়া বাইকারের ধাক্কাতে তাঁর মৃত্যু হয়। তার দিন কয়েক আগে একইভাবে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। এমনকী, সম্প্রতি এক স্কুল পড়ুয়াও বাইকের ধাক্কায় আহত হয়, বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। নিত্যদিন এমন ঘটনা ঘটছে অথচ পুলিশ প্রশাসন প্রাথমিক ব্যবস্থা নিলেও কোনও শাস্তি হচ্ছে না দোষীদের। আর সেই জন্যই এমন ঘটনা নিত্যদিন ঘটছে, বলে দাবি এলাকার বাসিন্দাদের। একাংশের অভিযোগ, “মাদকাসক্ত হয়ে গাড়ি বা বাইক চালানো কিংবা বেপরোয়া ড্রাইভিংয়ের জন্যই এমন অবস্থা। মেটেলি সংলগ্ন বিভিন্ন চা বাগান এলাকাগুলো প্রায় নেশার আখাড়ায় পরিণত হয়েছে। বারবার এহেন ঘটনা ঘটলেও প্রশাসন কেন কোনও কড়া পদক্ষেপ করছে না?” প্রশ্ন তাঁদের।
এদিন বেশ কিছু দাবি নিয়ে মেটেলি থানায় বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। তাঁদের বক্তব্য, “রাস্তার যেখানে-সেখানে ছোট ট্রাক, লরির মতো গাড়ি পার্কিং চলছে অবাধে। ফুটপাত দখল করে কিছু মানুষ ব্যবসা চালাচ্ছে। যার ফলে রাস্তা ক্রমাগত সঙ্কুচিত হয়ে পড়ছে। উপরন্তু নিত্যদিন বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানো কিংবা মাদকাসক্ত হয়ে গাড়ি চালানোর উপদ্রব তো রয়েইছে। যাবতীয় সেসব কারনেই দুর্ঘটনা বাড়ছে ক্রমাগত। স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, রাস্তায় কিছু স্পিড বেকার ছিল, সেই স্পিড বেকারগুলো তুলে দেওয়া হয়েছে, সেই কারনে দ্রুত গতিতে গাড়ি চলাচল করে এই রাস্তায়। এদিকে নির্বিকার মেটেলি পুলিশ প্রশাসন। অবিলম্বে প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা না নিলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দেয় ব্যবসায়ী এবং স্থানীয়রা। যদিও পুলিশ প্রশাসন আশ্বাস দেওয়ায় শেষমেশ অবরোধ তুলে নেন তাঁরা। দুপুর থেকে ফের গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হয়।