• ‘যার নুন খাবে, তার গুণ গাইতে হবে’, লোকশিল্পীদের হুঁশিয়ারি পুরুলিয়ার পুর চেয়ারম্যানের, ক্ষোভ অনেকের
    বর্তমান | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা, পুরুলিয়া: যার নুন খাবে, তার গুণ গাইতে হবে। কিছু লোকশিল্পী এটা করছেন না। শনিবার পুরুলিয়া শহরের রবীন্দ্রভবনে সরকারি অনুষ্ঠানে পুরুলিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান নব্যেন্দু মাহালির এই বক্তব্যে বিতর্ক শুরু হয়েছে। লোকশিল্পীদের একাংশ চেয়ারম্যানের বক্তব্যের বিষয়ে তাদের অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন। 


    শনিবার পুরুলিয়া শহরের রবীন্দ্রভবনে জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে লোক শিল্পীদের সম্মেলন হয়। লোকপ্রসার প্রকল্পের পুরুলিয়া জেলার প্রায় ৫০০ জন শিল্পীকে নিয়ে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাত, বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীব লোচন সোরেন, পুরুলিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান সহ জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। অনুষ্ঠানে নব্যেন্দুবাবুর বক্তব্য ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে। চেয়ারম্যান লোকশিল্পীদের কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বলে অভিযোগ। 


    চেয়ারম্যান বলেন, লোকশিল্পী আগেও ছিল। কিন্তু, লোকশিল্পীদের এই স্বীকৃতি ছিল না। সরকারি পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়ে সরকারি অনুষ্ঠান করার সুযোগ ছিল না। আগেও অনেকে টুসু গান, ঝুমুর গান করেছেন, তাঁরা তো কেউ লোকপ্রসার প্রকল্পের সুবিধা পাননি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্য সরকার লোকশিল্পীদের সম্মান জানানোর জন্য লোকপ্রসার প্রকল্পের মাধ্যমে তাঁদের ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। যে সরকার মাসিক এক হাজার টাকা করে সাম্মানিক ভাতা দিচ্ছে, তার গুণগান অনেকেই গাইছেন না। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা কি অন্যায়? তুমি যার নুন খাবে তার গুণ তো গাইতেই হবে। এটা হচ্ছে না। কিছু শিল্পী এটা করছেন না।


    পুরুলিয়ার বিজেপি বিধায়ক তথা দলের রাজ্য কমিটির সদস্য সুদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, রাজ্য সরকার আর তৃণমূল দলটা যে সমার্থক নয়, তা ওই দলের নেতারা ভুলে যাচ্ছেন। লোকশিল্পীদের যে ভাতা রাজ্য সরকার দিচ্ছে, তা আম আদমির ট্যাক্সের টাকা।


    ঝুমুর শিল্পী শিশুপাল সহিস বলেন, চেয়ারম্যানের কথা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। রাজ্য সরকার সম্মান দিয়েছে, ভাতা দিচ্ছে একথা সত্যি। কিন্তু, তার জন্য সব শিল্পী শাসক দলের হয়ে কথা বলবে, তা নাও হতে পারে। শিল্পীদের তো নিজস্ব সত্ত্বা রয়েছে। লোক শিল্পীদের এই অনুষ্ঠানে চেয়ারম্যান ওই কথা না বললেই পারতেন।


    পুরুলিয়া জেলার তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী বলেন, চেয়ারম্যানের কাছে এ বিষয়ে আরও স্পষ্ট করে জানার পরই বিস্তারিত বলতে পারব। চেয়ারম্যান যে কথা বলেছেন, তা হয়তো এখানে বলা বাঞ্ছনীয় নয়। কিন্তু, চেয়ারম্যান হয়তো মনে করেছেন ওই কথা বলার এটাই যোগ্য স্থান। কারও ব্যক্তি স্বাধীনতায় তো বাধা দেওয়া যায় না। এই বক্তব্য সম্পূর্ণভাবে চেয়ারম্যানের।
  • Link to this news (বর্তমান)