স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাসন্তী ব্লকের বল্লারটোপ এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ মমতাজ সরদার। ভাঙড় এলাকায় বাপের বাড়িতে গিয়েছিলেন। রাতে সেখানে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়েছিলেন। গভীর রাতে তাঁর ডান হাতে তীক্ষ্ণ বিষধর কালাচ সাপ কামড় দেয়। জ্বালা করতেই ঘুম ভাঙে ওই গৃহবধূর। যদিও সাপটিকে দেখতে পাননি। ঘুম থেকে তড়িঘড়ি উঠে পরিবারের সদস্যদের ঘটনার কথা জানায়।
পরিবারের লোকজন তাঁকে নিয়ে রাতেই স্থানীয় এক ওঝার বাড়িতে হাজির হয়। এরপর চলে ওঝার দাদাগিরি। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ায় শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে তাঁর পরিবারের লোকজন সেখানে থেকে উদ্ধার করে, সকালে চিকিৎসার জন্য ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকরা ওই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে আসে সরদার পরিবারে।
ঘটনা প্রসঙ্গে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সর্প বিশেষঞ্জ চিকিৎসক ডাঃ সমরেন্দ্র নাথ রায় জানিয়েছেন, ‘রাতে বিছানার মধ্যে বধূকে কালাচ সাপ কামড় দিয়েছিল। পরিবারের লোকজন ওঝা-গুণীনের কাছে নিয়ে গিয়ে সময় নষ্ট করে। ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসে। সে ক্ষেত্রে কোনও কিছুই করার সুযোগ ছিলেনা। এমনটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার। সাধারণ মানুষের সচেতনতার জন্য বলব, ‘বিশেষ করে রাতের অন্ধকারে সাবধানে চলাফেরা করুন। মশারি টাঙিয়ে ঘুমান। তারপরও যদি সাপের কামড় ঘটে, যত দ্রুত সম্ভব নিকটবর্তী সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সে ক্ষেত্রে রোগীকে বাঁচানো সম্ভব। ওঝা-গুণীনের দ্বারস্থ হলে মৃত্যু নিশ্চিত।’
উল্লেখ্য, এরকমই এক ঘটনা কিছুদিন আগে ঘটে। জয়নগর ২ ব্লকের বকুলতলা থানার মনিরতট গড় গ্রামের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী রিজুয়ানা মন্ডলকে রাত ১টার নাগাদ বিছানার মধ্যে তীক্ষ্ণ বিষধর কালাচ সাপ কামড় দেয়। পরিবারের লোকজন তাকে স্থানীয় এক গুনীণের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে দীর্ঘক্ষণ চলে ঝাড়ফুঁক। পরিস্থিতি খারাপ হতেই বেগতিক বুঝে পরিবারের লোকজন সকালে তাকে স্থানীয় জয়নগর-কুলতলি গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে ওই ছাত্রীকে পর্যাপ্ত পরিমান সাপে কামড়ানো প্রতিষেধক এভিএস দিয়ে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন চিকিৎসকরা। ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের মাতৃমাতে নিয়ে গেলে ওই ছাত্রীকে মৃত বলে ঘোষনা করে চিকিৎসকরা।