• মহালয়ায় মহামিছিল ও মহা সমাবেশ! অভয়ার বিচারের দাবিতে ফের রাজপথে জুনিয়র ডাক্তারেরা...
    ২৪ ঘন্টা | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সামনেই উৎসব। মানুষ এবার সেই উৎসবেই মাতবেন। কিন্তু সবাই কি ভুলে যাবেন অভয়াকে? আরজি করের নির্যাতিতাকে? তাঁর আত্মত্যাগকে, লড়াইকে, যন্ত্রণাকে? তেমনটা কাঙ্ক্ষিত নয়। সেটা ভিতর থেকে বিশ্বাস করেন বলেই তাঁরা ফের আন্দোলনে-মিছিলে-সমাবেশে। কলকাতার জুনিয়র ডাক্তারেরা। অন্তত, তাঁদের মনোভাব এমনই। ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে তাঁরা এই মর্মে সাধারণ মানুষের কাছে একটি আবেদন রেখেছেন যে, সকলে যেন তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন।  

    কবে, কোথায়?

    আগামী মহালয়ার দিনে। ২ অক্টোবরে। ঘটনাচক্রে যেটি গান্ধীজয়ন্তীও।

    আসন্ন ২ অক্টোবর মহালয়ার দিনে জুনিয়র ডাক্তারেরা এক মহা মিছিলের ডাক দিয়েছেন, যে-মিছিলের শেষে আয়োজিত হবে এক মহাসমাবেশও! তাঁরা জানাচ্ছেন, কলেজ স্কোয়ার থেকে শুরু হয়ে এই মহামিছিল ধর্মতলায় গিয়ে শেষ হবে! তাঁদের দাবি, সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক এই মিছিল ও সমাবেশে যেন সমস্ত সচেতন মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে যোগ দেন। তাঁরা তেমনই চাইছেন। পুজোর আগে, মানুষকে মনে করিয়ে দেওয়া যে, এখনও অভয়া বিচার পাননি। 

    তাঁদের এই মহামিছিল ও মহাসমাবেশ তবে শুধু অভয়ার বিচারের দাবিতেই নয়। এর সঙ্গে থাকছে রাজ্যের সমস্ত সরকারি হাসপাতালের সুরক্ষা নিশ্চিত করা, স্বাস্থ্যক্ষেত্র-সহ সমাজের সর্ব স্তরে ভিতরে ঢুকে থাকা ভয়ের রাজনীতিকে নির্মূল করা! তাঁরা সমস্ত মানুষকে WBJDF-এর তরফ থেকে ডাক দিয়ছেন তাঁদের সঙ্গে এই সব দাবিতে পা মেলাতে, হাজির হতে উক্ত মহামিছিলে, মহালয়ার দিনে দুপুর ১ টায়।

    প্রসঙ্গত, সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তার ও নার্সদের উপর হামলার প্রতিবাদে ফের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। আগামীকাল, সোমবার থেকে ফের কর্মবিরতি নামছেন তাঁরা। সোমবার রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি। সেই রায়ের দিকেও তাকিয়ে রয়েছেন তাঁরা। রায় পছন্দমতো না হলে সোমবারেই ফের বড় আন্দোলনে নামবেন। জুনিয়র ডাক্তারেরা সোমবার বিকেল পর্যন্ত ডেডলাইন দিয়েছেন রাজ্যকে। তাঁরা জানিয়েছেন, 'রাজ্যের প্রতি (তাঁদের কোনও) আস্থা নেই।' 

    শুক্রবার রাতে সাগর দত্ত হাসপাতালে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। মারধর করেন রোগীর পরিবারের লোকজন। এরই প্রতিবাদে শনিবার সেখানে সারাদিন কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের অভিযোগ, সাগরদত্ত হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের 'আরজি কর করে দেওয়ার'‌ হুমকি দেওয়া হয়েছে। ঘটনায় পুলিসের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এক নার্স। ঘটনার সময় পুলিস কার্যত নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল বলে দাবি ওই নার্সের। তিনি বলেন, 'যখন আমাদের মারছিল রোগীর বাড়ির লোকজনেরা, তখন পুলিসকর্মীরা দূরে দাঁড়িয়ে সেটা দেখছিলেন, সাহায্য করেননি।' তাই কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা-সহ ১০ দফা দাবিতে কর্মবিরতিতে বসেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সাগরদত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্মবিরতি তুলতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব রকমের আশ্বাস দেওয়া হলেও নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে আশ্বস্ত হননি চিকিৎসক-সহ স্বাস্থ্যকর্মীরা।  

    শনিবার দফায় দফায় চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে কথা বলেন স্বাস্থ্যসচিব, জেলাশাসক-সহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্তারা। স্বাস্থ্যসচিবের উপস্থিতিতেই ব্যারাকপুর পুলিস কমিশনার অলোক রাজোরিয়া ডাক্তারদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাস দেন। পুলিসি প্রহরা বাড়ানো থেকে শুরু করে অতিরিক্ত প্রায় ৩০০টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে বলেও আশ্বাস দেন তাঁরা। তবে এই আশ্বাস মেনে নেননি অবস্থানরত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাঁদের দাবি, 'স্বাস্থ্যসচিব আমাদের কেবল মৌখিক প্রতিশ্রুতিই দিলেন। সিসিটিভি বসানো-সহ আরও বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই প্রতিশ্রুতিগুলি আমরা গত এক মাস ধরে শুনে এসেছি। আমরা আর প্রতিশ্রুতিতে ভুলব না। যতক্ষণ না নিরাপত্তা নিশ্চিত হচ্ছে, আমাদের আন্দোলন চলবে।' তাঁরা আরও বলেন, রাজ্যের প্রতি তাঁদের আর আস্থা নেই। তাই সোমবার বিকেল থেকেই তাঁরা ফের কর্মবিরতিতে। 

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)